ক্ষীরো। রানী কল্যাণী নাম শোন না'ই?
দাতা ব'লে তাঁর বড়ো যে বড়াই।
এইবার তুমি যাও তাঁরি ঘরে
ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে এসো ভরে,
পথ না জান তো মোর লোকজন
পৌঁছিয়ে দেবে রানীর ভবন।
ঠাকুরানী। তবে তথাস্তু। যাই তাঁরি কাছে।
তাঁর ঘর মোর খুব জানা আছে।
আমি সে লক্ষ্মী, তোর ঘরে এসে
অপমান পেয়ে ফিরিলাম শেষে।
এই কথা ক'টি করিয়ো স্মরণ —
ধনে মানুষের বাড়ে নাকো মন।
আছে বহু ধনী, আছে বহু মানী —
সবাই হয় না রানী কল্যাণী।
ক্ষীরো। যাবে যদি তবে ছেড়ে যাও মোরে।
দস্তুরমত কুর্নিশ করে।
মালতী! মালতী! কোথায় তারিণী!
কোথা গেল মোর চামরধারিণী!
আমার এক-শো পঁচিশটে দাসী?
তোরা কোথা গেলি বিনি কিনি কাশী!
কল্যাণীর প্রবেশ
কল্যাণী। পাগল হলি কি। হয়েছে কী তোর।
এখনো যে রাত হয় নিকো ভোর —
বল্ দেখি কী যে কাণ্ড কল্লি।
ডাকাডাকি করে জাগালি পল্লী!
ক্ষীরো। ওমা, তাই তো গা! কী জানি কেমন
সারা রাত ধরে দেখেছি স্বপন।
বড়ো কুস্বপ্ন দিয়েছিল বিধি,
স্বপনটা ভেঙে বাঁচলেম দিদি!
একটু দাঁড়াও, পদধূলি লব —
তুমি রানী, আমি চিরদাসী তব।
২৯ অগ্রহায়ণ ১৩০৪