পঞ্চমাঙ্ক। দৃশ্য কৈলাস
সিংহের উপর ত্রিপুরারি ও মহাদেবী আসীন
(সিংহের অভাবে কাঠের চৌকি হইলে ক্ষতি নাই। – লেখক)
মহাদেবী। প্রভু, দেবদেব, তুমি তো ত্রিকালজ্ঞ, ভূত ভবিষ্যৎ বর্তমান তোমার নখদর্পণে ; এইবার বলো দেখি ১৮৭৯ সালের এক আইনে কী বলে।
ত্রিপুরারি। মহাদেবী, শুম্ভনিশুম্ভঘাতিনী, তবে অবধান করো। কোনো-একটি বিষয়ের অনেকগুলি দলিল হইলে তাহার মধ্যে প্রধানখানিতে নিয়মিত স্ট্যাম্প, অপরগুলিতে এক টাকা অনুসারে দিতে হয়।
ইহার পর দলিল রেজিস্টারির খরচা, তামাদির নিয়ম, উকিল-খরচা, খাজনা-বিষয়ক আইন, ইন্কম্ট্যাক্স, বাঙ্গিডাক, মনিঅর্ডার, সর্বশেষ সাউথ ইস্টার্ন্ স্টেট রেলওয়ের তৃতীয় শ্রেণীর ভাড়ার কথা বিবৃত করিয়া যবনিকাপতন। এই অঙ্কে যে ব্যক্তি সিংহ সাজিবে তাহার কিঞ্চিৎ আপত্তি থাকিতে পারে ; অতক্ষণ দুই জনকে স্কন্ধে করিয়া হামাগুড়ির ভঙ্গিতে নিশ্চল দাঁড়াইয়া থাকা কঠিন ব্যাপার! সেই জন্য উকিল-খরচা-কথনের মধ্যে সিংহ একবার গর্জন করিয়া উঠিবে, ‘ মা, আমার ক্ষুধা পাইয়াছে। ' মা বলিলেন, ‘ তা, যাও বাছা, সাহারা মরুতে তোমার শিকার ধরিয়া খাও গে, আমরা নীচে নামিয়া বসিতেছি। ' হামাগুড়ি দিয়া সিংহ নিষ্ক্রান্ত হইবে। এই সুযোগে দর্শকেরা সিংহের আবাসস্থলের পরিচয় পাইবেন।– আমার কোনো কোনো নব্যবন্ধু পরামর্শ দিয়াছিলেন, ইহার মধ্যে মধ্যে নন্দীভৃঙ্গীর হাস্যরসের অবতারণা করিলে ভালো হয়। কিন্তু তাহা হইলে নাটকের গৌরব লাঘব হয়। এইজন্য হাস্যপ্রগল্ভতা আমি সযত্নে দূরে পরিহার করিয়াছি। ভবিষ্যতে সুশ্রুত ও চরক-সংহিতা নাট্যাকারে রচনা করিবার অভিলাষ আছে এবং উপন্যাসের ন্যায় লঘু সাহিত্যকে কতদূর পর্যন্ত সারবান করিয়া তোলা যাইতে পারে পাঠকদিগকে তাহারও কিঞ্চিৎ নমুনা দিবার সংকল্প করিয়াছি।
ভবদীয় একান্ত অনুগত শ্রীজনহিতৈষী
সাহিত্যপ্রচারক