সুদর্শনা। পারবই, নিশ্চয় পারব।
সুরঙ্গমা। আচ্ছা, চেষ্টা দেখো।
সুদর্শনা। সুরঙ্গমা, তোমার মতো আমি অত বেশি নম্র নই, আমি শক্ত আছি। সকলের কাছে তিনি আমাকে স্বীকার করে নেবেন – এ তিনি এড়াতে পারবেন না।
সুরঙ্গমা। সে-কথা আজকে ভাববার দরকার নেই রাজকুমারী, তুমি নিজে তাঁকে সম্পূর্ণ স্বীকার করে নিয়ো, তাহলেই সব সহজ হবে।
সুদর্শনা। ও-কথা কেন বলছ? আমি তো সেইজন্যেই প্রস্তুত হয়ে রয়েছি। আর কিন্তু বিলম্ব কোরো না।
সুরঙ্গমা। তাঁর দিকে সমস্তই প্রস্তুত হয়েই আছে। আজ আমরা তবে বিদায় হই।
সুদর্শনা। কোথায় যাচ্ছ?
সুরঙ্গমা। বসন্ত-উৎসব কাছে এল, তার আয়োজন করতে হবে।
সুদর্শনা। কী রকমের আয়োজনটা হওয়া চাই?
সুরঙ্গমা। মাধবীকুঞ্জকে তো তাড়া দিতে হয় না। আমের বনেও মুকুল আপনি ধরে। আমাদের মানুষের শক্তিতে যার যেটা দেবার সেটা সহজে প্রকাশ হতে চায় না। কিন্তু সেদিন সেটা আবৃত থাকলে চলবে না। কেউ দেবে গান, কেউ দেবে নাচ।
সুদর্শনা। আমি সেদিন কী দেব সুরঙ্গমা।
সুরঙ্গমা। সে-কথা তুমিই বলতে পার।
সুদর্শনা। আমি নিজ হাতে মালা গেঁথে সুন্দরকে অর্ঘ্য পাঠাব।
সুরঙ্গমা। সে-ই ভালো।
সুদর্শনা। তাঁকে দেখব কী করে॥
সুরঙ্গমা। সে তিনিই জানেন।
সুদর্শনা। আমাকে কোথায় যেতে হবে?
সুরঙ্গমা। কোথাও না, এইখানেই।
সুদর্শনা। কী বল সুরঙ্গমা, অন্ধকারের সভা এইখানেই? যেখানে চিরদিন আছি এইখানেই? সাজতে হবে না?
সুরঙ্গমা। নাই-বা সাজলে। একদিন তিনিই সাজাবেন যে-সাজে তোমাকে মানায়।
তোমার, পথের ধুলার রঙে রঙে
আঁচল রঙিন হবে।
তোমার বনের রাঙা ধূলি
ফুটায় পূজার কুসুমগুলি,
সেই ধূলি হায় কখন আমায়
আপন করি লবে॥