মল্লিকা। রাজকুমারী, কোথায় চলেছ?
বাসবী। ঘরে।
মল্লিকা। এদিকে নটী যে প্রস্তুত হয়ে এল।
বাসবী। থাক্ থাক্।
[ প্রস্থান
মল্লিকা। মহারানী শুনতে পাচ্ছ?
লোকেশ্বরী। শুনছি বই কি। বিষম কোলাহল।
মল্লিকা। নিশ্চয় এঁরা এসে পড়েছেন।
লোকেশ্বরী। কিন্তু ঐ যে এখনো শুনছি, নমো—
মল্লিকা। সুর বদলেছে। “নমো বুদ্ধায়” গর্জন আরও প্রবল হয়ে উঠেছে আঘাত পেয়েই। সঙ্গে সঙ্গে ওই শোনো— “নমঃ পিনাকহস্তায়”। আর ভয় নেই।
লোকেশ্বরী। ভাঙল রে ভাঙল! যখন সব ধুলো হয়ে যাবে তখন কে জানবে ওর মধ্যে আমার প্রাণ কতখানি দিয়েছিলেম! হায় রে, কত ভক্তি! মল্লিকা, ভাঙার কাজটা শীঘ্র হয়ে গেলে বাঁচি— ওর ভিতরটা যে আমার বুকের মধ্যে।
রত্নাবলীর প্রবেশ
রত্না, তুমিও চলেছ পূজায়?
রত্নাবলী। ভ্রমক্রমে পূজ্যকে পূজা না করতে পারি কিন্তু অপূজ্যকে পূজা করার অপরাধ আমার দ্বারা ঘটে না।
লোকেশ্বরী। তবে কোথায় যাচ্ছ?
রত্নাবলী। মহারানীর কাছেই এখানে এসেছি। আবেদন আছে।
লোকেশ্বরী। কী, বলো।
রত্নাবলী। ঐ নটী যদি এখানে পূজার অধিকার পায় তাহলে এই অশুচি রাজবাড়িতে বাস করতে পারব না।
লোকেশ্বরী। আশ্বাস দিচ্ছি আজ এ পূজা ঘটবে না।
রত্নাবলী। আজ না হক কাল ঘটবে।
লোকেশ্বরী। ভয় নেই, কন্যা, পূজাকে সমূলে উচ্ছেদ করব।
রত্নাবলী। যে অপমান সহ্য করেছি তাতেও তার প্রতিকার হবে না।
লোকেশ্বরী। তুমি রাজার কাছে অভিযোগ করলে নটীর নির্বাসন, এমন কি, প্রাণদণ্ডও হতে পারে।
রত্নাবলী। তাতে ওর গৌরব বাড়িয়ে দেওয়া হবে।
লোকেশ্বরী। তবে তোমার কী ইচ্ছা?
রত্নাবলী। ও যেখানে পূজারিনী হয়ে পূজা করতে যাচ্ছিল সেখানেই ওকে নটী হয়ে নাচতে হবে। মল্লিকা, চুপ করে রইল যে। তুমি কী বল?
মল্লিকা। প্রস্তাবটা কৌতুকজনক।
লোকেশ্বরী। আমার মন সায় দিচ্ছে না রত্না।