সুদর্শনা। সুরঙ্গমা, ভুল তোরা করতে পারিস, কিন্তু আমার কখনোই ভুল হতে পারে না। আমি হব রানী। ঐ তো আমার রাজাই বটে।
সুরঙ্গমা। কাকে তুমি রাজা বলছ?
সুদর্শনা। ওই যার মাথায় ফুলের ছাতা ধরে আছে।
সুরঙ্গমা। ওই যাঁর পতাকায় কিংশুক আঁকা?
সুদর্শনা। আমি তো দেখবামাত্রই চিনেছি, তোর মনে কেন সন্দেহ আসছে।
সুরঙ্গমা। ও তোমার রাজা নয়। আমি যে ওকে চিনি।
সুদর্শনা। ও কে?
সুরঙ্গমা। ও সুবর্ণ। ও জুয়ো খেলে বেড়ায়।
সুদর্শনা। মিথ্যে কথা বলিস নে। সবাই ওকে রাজা বলছে। তুই বুঝি সকলের চেয়ে বেশি জানিস।
সুরঙ্গমা। ও যে সবাইকে মিথ্যে লোভ দেখাচ্ছে, সেইজন্যে সবাই ওর বশ হয়েছে। যখন ভুল ভাঙবে তখন হায় হয়ে করে মরবে।
সুদর্শনা। তোর বড়ো অহংকার হয়েছে। তুই আমার চেয়ে চিনিস?
সুরঙ্গমা। যদি আমার অহংকার থাকত, তাহলে আমি চিনতে পারতুম না।
সদর্শনা। আমি ওকেই মালা পাঠিয়ে দিয়েছি।
সুরঙ্গমা। সে মালা সাপ হয়ে তোমাকে এসে দংশন করবে।
সুদর্শনা। আমাকে অভিসম্পাত? তোর তো আস্পর্ধা কম নয়! যা এখান থেকে চলে, আমি তোর মুখ দেখব না।
আমার মন আজ এমনই চঞ্চল হয়েছে! এমন তো কোনোদিন হয় না। সুরঙ্গমা!
সুদর্শনা। আমার মালা কি ভুল পথেই গেছে?
সুরঙ্গমা। হাঁ।
সুদর্শনা। আবার সেই একই কথা? আচ্ছা বেশ, ভুল করেছি, বেশ করেছি। তিনি কেন নিজে দেখা দিয়ে ভুল ভাঙিয়ে দেন না? কিন্তু তোর কথা মানব না। যা আমার কাছ থেকে – মিছিমিছি আমার মনে ধাঁধাঁ লাগিয়ে দিস নে।
ভগবান চন্দ্রমা, আজ আমার চঞ্চলতার উপরে তুমি কেবলই কটাক্ষপাত করছ। স্মিত কৌতুকে সমস্ত আকাশ ভরে গেল যে! প্রতিহারী!
প্রতিহারী। কী রাজকুমারী?
সুদর্শনা। ওই যে আম্রবনবীথিকায় উৎসববালকেরা গান গেয়ে যাচ্ছে, ডাক্ ডাক্, ওদের ডেকে নিয়ে আয়। একটু গান শুনি।