ডাক এল তার তরঙ্গেরি,
বাজুক বক্ষে বজ্রভেরী
আকূল প্রাণের সে উৎসবে।
রক্ষিণী। ফেরো তোমরা এখান থেকে।
শ্রীমতী। আমরা প্রভুর পূজায় চলেছি।
রক্ষিণী। পূজা বন্ধ।
মালতী। আজ প্রভুর জন্মোৎসব।
রক্ষিণী। পূজা বন্ধ।
শ্রীমতী। এও কি সম্ভব!
রক্ষিণী। পূজা বন্ধ। আমি আর কিছু জানিনে। দাও তোমাদের অর্ঘ্য।
শ্রীমতী। এ কী পরীক্ষা আমার! অপরাধ কি ঘটেছে কিছু!
বুদ্ধে যো খলিতো দোসো বুদ্ধো খমতু তং মম।
রক্ষিণী। বন্ধ করো স্তব।
শ্রীমতী। দ্বারের কাছেই অবরোধ! প্রবেশ আমার ঘটল না, ঘটল না।
মালতী। কাঁদ কেন শ্রীমতীদিদি। বিনা অর্ঘ্যে বিনা মন্ত্রে কি পূজা হয় না? ভগবান তো আমাদের মনের ভিতরেও জন্মলাভ করেছেন।
শ্রীমতী। শুধু তাই নয় মালতী, তাঁর জন্মে আমরা সবাই জন্মেছি। আজ সবারই জন্মোৎসব।
নন্দা। শ্রীমতী, হঠাৎ একমূহূর্তে আজ এমন দুর্দিন ঘনিয়ে এল কেন?
শ্রীমতী। দুর্দিনই যে সুদিন হয়ে ওঠবার দিন আজ। যা ভেঙেছে তা জোড়া লাগবে, যা পড়েছে তা উঠবে আবার।
অজিতা। দেখো শ্রীমতী, এখন আমার মনে হচ্ছে তোমাকে যে পূজার ভার দেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে নিশ্চয় ভুল আছে। সব তাই নষ্ট হল। গোড়াতেই আমাদের বোঝা উচিত ছিল।
শ্রীমতী। আমি ভয় করিনে। জানি প্রথম থেকেই কেউ মন্দিরে দ্বার খোলা পায় না। ক্রমে যায় আগল খুলে। তবু আমার বলতে কোনো সংকোচ নেই যে, প্রভু আহ্বান করেছেন আমাকে। বাধা যাবে কেটে। আজই যাবে।
ভদ্রা। রাজার বাধাও সরাতে পারবে?
শ্রীমতী। সেখানে রাজার রাজদণ্ড পৌঁছয় না।
রত্নাবলীর প্রবেশ
রত্নাবলী। কী বলছিলে, শুনেছি শুনেছি। তুমি রাজার বাধাও মান না এতবড়ো তোমার সাহস।
শ্রীমতী। পূজাতে রাজার বাধাই নেই।
রত্নাবলী। নেই রাজার বাধা? সত্যি নাকি? যেয়ো তুমি পূজা করতে, আমি দেখব দুই চোখের আশ মিটিয়ে।