নমো নমো নন্তগুণন্নবায়,
নমো নমো সাকিয়নন্দনায়।
রক্ষিণী, তুমিও আমার সঙ্গে সঙ্গে বলো।
রক্ষিণী। আমার মুখে কি পুণ্যমন্ত্র বের হবে?
শ্রীমতী। ভক্তি আছে হৃদয়ে, যা বলবে তাই পূণ্য হবে। বলো—
নমো নমো বুদ্ধ দিবাকরায়।
[ ক্রমে ক্রমে আবৃত্তি করাইয়া লইল
রক্ষিণী। আমার বুকের বোঝা গেল শ্রীমতী, আজকের দিন আমার সার্থক হল। যে-কথা বলতে এসেছিলেম এবার বলে নিই। তুমি এখান থেকে পালাও, আমি তোমাকে পথ করে দিচ্ছি।
শ্রীমতী। কেন?
রক্ষিণী। মহারাজ অজাতশত্রু দেবদত্তের কাছে দীক্ষা নিয়েছেন। তিনি অশোকতলে প্রভুর আসন ভেঙে দিয়েছেন।
মালতী। হায় হায় দিদি, হায় হায়, আমার দেখা হল না। আমার ভাগ্য মন্দ, ভেঙে গেল সব।
শ্রীমতী। কী বলিস মালতী। তাঁর আসন অক্ষয়। মহারাজ বিম্বিসার যা গড়েছিলেন তাই ভেঙেছে। প্রভুর আসনকে কি পাথর দিয়ে পাকা করতে হবে। ভগবানের নিজের মহিমাই তাকে রক্ষা করে।
রক্ষিণী। রাজা প্রচার করেছেন সেখানে যে-কেউ আরতি করবে, স্তবমন্ত্র পড়বে, তার প্রাণদণ্ড হবে। শ্রীমতী, তাহলে তুমি আর কী করবে এখানে?
শ্রীমতী। অপেক্ষা করে থাকব।
রক্ষিণী। কতদিন?
শ্রীমতী। যতদিন না পূজার ডাক আসে। যতদিন বেঁচে আছি ততদিনই।
রক্ষিণী। পূর্ব হতে আজ তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি শ্রীমতী।
শ্রীমতী। কিসের ক্ষমা?
রক্ষিণী। হয়তো রাজার আদেশে তোমাকেও আঘাত করতে হবে।
শ্রীমতী। করো আঘাত।
রক্ষিণী। সে আঘাত হয়তো রাজবাড়ির নটীর উপরে পড়বে, কিন্তু প্রভুর ভক্ত সেবিকাকে আজও আমার প্রণাম, সেদিনও আমার প্রণাম, আমাকে ক্ষমা করো।
শ্রীমতী। আমার প্রভু আমাকে সকল আঘাত ক্ষমা করবার বর দিন। বুদ্ধো খমতু! বুদ্ধো খমতু!
দ্বিতীয় রক্ষিণী। রোদিনী!
প্রথম রক্ষিণী। কী পাটলী?
পাটলী। ভগবতী উৎপলপর্ণাকে এরা মেরে ফেলেছে।
রোদিনী। কী সর্বনাশ!
শ্রীমতী। কে মারলে?