দীন দান

নিবেদিল রাজভৃত্য, ‘ মহারাজ, বহু অনুনয়ে

সাধুশ্রেষ্ঠ নরোত্তম তোমার সোনার দেবালয়ে

না লয়ে আশ্রয় আজি পথপ্রান্তে তরুচ্ছায়াতলে

করিছেন নামসংকীর্তন। ভক্তবৃন্দ দলে দলে

ঘেরি তাঁরে দরদর - উদ্‌বেলিত আনন্দধারায়

ধৌত ধন্য করিছেন ধরণীর ধূলি। শূন্যপ্রায়

দেবাঙ্গন ; ভৃঙ্গ যথা স্বর্ণময় মধুভান্ড ফেলি

সহসা কমলগন্ধে মত্ত হয়ে দ্রুত পক্ষ মেলি

ছুটে যায় গুঞ্জরিয়া উন্মীলিত পদ্ম - উপবনে

উন্মুখ পিপাসাভরে, সেইমতো নরনারীগণে

সোনার দেউল - পানে না তাকায়ে চলিয়াছে ছুটি

যেথায় পথের প্রান্তে ভক্তের হৃদয়পদ্ম ফুটি

বিতরিছে স্বর্গের সৌরভ। রত্নবেদিকার'পরে

একা দেব রিক্ত দেবালয়ে। '

 

শুনি রাজা ক্ষোভভরে

সিংহাসন হতে নামি গেলা চলি যেথা তরুচ্ছায়ে

সাধু বসি তৃণাসনে ; কহিলেন নমি তাঁর পায়ে,

‘ হেরো প্রভু, স্বর্ণশীর্ষ নৃপতিনির্মিত নিকেতন

অভ্রভেদী দেবালয়, তারে কেন করিয়া বর্জন

দেবতার স্তবগান গাহিতেছ পথপ্রান্তে বসে? '

 

‘ সে মন্দিরে দেব নাই ' কহে সাধু।

 

রাজা কহে রোষে,

‘ দেব নাই! হে সন্ন্যাসী, নাস্তিকের মতো কথা কহ।

রত্নসিংহাসন - ' পরে দীপিতেছে রতনবিগ্রহ —

শূন্য তাহা? '

 

‘ শূন্য নয়, রাজদম্ভে পূর্ণ ' সাধু কহে,