ছিন্ন পত্র

কর্ম যখন দেবতা হয়ে জুড়ে বসে পূজার বেদী,

               মন্দিরে তার পাষাণ-প্রাচীর অভ্রভেদী

                   চতুর্দিকেই থাকে ঘিরে ;

          তারই মধ্যে জীবন যখন শুকিয়ে আসে ধীরে ধীরে

পায় না আলো, পায় না বাতাস, পায় না ফাঁকা, পায় না কোনো রস,

                   কেবল টাকা, কেবল সে পায় যশ,

                   তখন সে কোন্‌ মোহের পাকে

          মরণ - দশা ঘটেছে তার, সেই কথাটাই ভুলে থাকে।

 

 

          আমি ছিলেম জড়িয়ে পড়ে সেই বিপাকের ফাঁসে ;

                             বৃহৎ সর্বনাশে

                    হারিয়েছিলেম বিশ্বজগৎখানি।

                   নীল আকাশের সোনার বাণী

           সকাল-সাঁঝের বীণার তারে

           পৌঁছত না মোর বাতায়ন-দ্বারে।

ঋতুর পরে আসত ঋতু শুধু কেবল পঞ্জিকারই পাতে,

                   আমার আঙিনাতে

     আনত না তার রঙিন পাতার ফুলের নিমন্ত্রণ।

     অন্তরে মোর লুকিয়ে ছিল কী যে সে ক্রন্দন

          জানব এমন পাই নি অবকাশ।

               প্রাণের উপবাস

          সংগোপনে বহন করে কর্মরথে

     সমারোহে চলতেছিলেম নিষ্ফলতার মরুপথে।

     তিনটে চারটে সভা ছিল জুড়ে আমার কাঁধ ;

দৈনিকে আর সাপ্তাহিকে ছাড়তে হত নকল সিংহনাদ ;

     বীডন কুঞ্জে মীটিং হলে আমি হতেম বক্তা ;

          রিপোর্ট লিখতে হত তক্তা তক্তা ;

               যুদ্ধ হত সেনেট-সিন্ডিকেটে,

তার উপরে আপিস আছে, এমনি করে কেবল খেটে খেটে