দূত

           ছিনু আমি বিষাদে মগনা

                   অন্যমনা

            তোমার বিচ্ছেদ-অন্ধকারে।

            হেনকালে নির্জন কুটিরদ্বারে

                   অকস্মাৎ

               কে করিল করাঘাত,

কহিল গম্ভীর কণ্ঠে, অতিথি এসেছি, দ্বার-খোলো।

 

                   মনে হল

            ওই যেন তোমারি স্বর শুনি,

            ওই যেন দক্ষিণবায়ু দূরে ফেলি মদির ফাল্‌গুনী

                   দিগন্তে আসিল পূর্বদ্বারে,

            পাঠালো নির্ঘোষ তার বজ্রধ্বনিমন্দ্রিত মল্লারে।

                   কেঁপেছিল বক্ষতল

                 বিলম্ব করি নি তবু অর্ধ পল।

 

                 মুহূর্তে মুছিনু অশ্রুবারি,

                   বিরহিণী নারী,

   ছাড়িনু ধেয়ান তব তোমারি সম্মানে,

                   ছুটে গেনু দ্বার-পানে।

            শুধালেম, তুমি দূত কার।

          সে কহিল, আমি তো সবার।

যে ঘরে তোমার শয্যা একদিন পেতেছি আদরে

            ডাকিলাম তারে সেই ঘরে।

                   আনিলাম অর্ঘ্যথালি,

                             দীপ দিনু জ্বালি।

     দেখিলাম বাঁধা তারি ভালে

যে মালা পরায়েছিনু তোমারেই বিদায়ের কালে।