বিদায়

কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও।

        তারি রথ নিত্যই উধাও

জাগাইছে অন্তরীক্ষে হৃদয়স্পন্দন,

চক্রে-পিষ্ট আঁধারের বক্ষ-ফাটা তারার ক্রন্দন।

 

         ওগো বন্ধু, সেই ধাবমান কাল

জড়ায়ে ধরিল মোরে ফেলি তার জাল —

          তুলে নিল দ্রুতরথে

      দুঃসাহসী ভ্রমণের পথে

          তোমা হতে বহুদূরে।

          মনে হয় অজস্র মৃত্যুরে

          পার হয়ে আসিলাম

     আজি নবপ্রভাতের শিখরচূড়ায়,

     রথের চঞ্চল বেগ হাওয়ায় উড়ায়

           আমার পুরানো নাম।

  ফিরিবার পথ নাহি ;

           দূর হতে যদি দেখ চাহি

                 পারিবে না চিনিতে আমায়।

                    হে বন্ধু, বিদায়।

 

কোনোদিন কর্মহীন পূর্ণ অবকাশে,

               বসন্তবাতাসে

অতীতের তীর হতে যে রাত্রে বহিবে দীর্ঘশ্বাস,

                ঝরা বকুলের কান্না ব্যথিবে আকাশ,

সেইক্ষণে খুঁজে দেখো, কিছু মোর পিছে রহিল সে

                 তোমার প্রাণের প্রান্তে ; বিস্মৃতপ্রদোষে

                 হয়তো দিবে সে জ্যোতি,

হয়তো ধরিবে কভু নামহারা-স্বপ্নের মুরতি।

                  তবু সে তো স্বপ্ন নয়,

সব চেয়ে সত্য মোর, সেই মৃত্যুঞ্জয়,