সোনার তরী

               নব নব শাখে ;

তুই     তবু      একমনে    মৌনব্রত    একাসনে

               বসি নিরলস।

ক্রমে সে   পড়িবে   ধরা,   গীত   বন্ধ   হয়ে   যাবে

               মানিবে সে বশ।

 

তখন   কোথায়   তারে   ভুলায়ে   লইয়া   যাবি —

               কোন্‌ শূন্যপথে,

অচৈতন্য    প্রেয়সীরে    অবহেলে   লয়ে   কোলে

               অন্ধকার রথে!

যেথায়    অনাদি     রাত্রি   রয়েছে   চিরকুমারী —

               আলোক-পরশ

একটি   রোমা ' রেখা   আঁকে নি   তাহার   গাত্রে

               অসংখ্য বরষ ;

সৃজনের     পরপ্রান্তে    যে    অনন্ত   অন্তঃপুরে

               কভু দৈববশে

দূরতম      জ্যোতিষ্কের    ক্ষীণতম    পদধ্বনি

               তিল নাহি পশে,

সেথায়    বিরাট    পক্ষ    দিবি   তুই    বিস্তারিয়া

               বন্ধনবিহীন,

কাঁপিবে    বক্ষের     কাছে   নবপরিণীতা    বধূ

                নূতন স্বাধীন।

 

ক্রমে   সে   কি   ভুলে   যাবে   ধরণীর   নীড়খানি

               তৃণে পত্রে গাঁথা —

এ   আনন্দ-সূর্যালোক, এই   স্নেহ, এই   গেহ,

               এই পুষ্পপাতা?

ক্রমে   সে   প্রণয়ভরে   তোরেও   কি করে   লবে

               আত্মীয় স্বজন,

অন্ধকার   বাসরেতে    হবে    কি    দুজনে   মিলি

               মৌন আলাপন।

তোর    স্নিগ্ধ    সুগম্ভীর    অচঞ্চল   প্রেমমূর্তি,