অবুঝ মন

অবুঝ শিশুর আবছায়া এই নয়ন - বাতায়নের ধারে

আপনাভোলা মনখানি তার অধীর হয়ে উঁকি মারে।

        বিনাভাষার ভাবনা নিয়ে কেমন আঁকুবাঁকুর খেলা —

        হঠাৎ ধরা, হঠাৎ ছড়িয়ে ফেলা,

         হঠাৎ অকারণ

কী উৎসাহে বাহু নেড়ে উদ্দাম গর্জন।

         হঠাৎ দুলে দুলে ওঠে,

অর্থবিহীন কোন্‌ দিকে তার লক্ষ ছোটে।

          বাহির-ভুবন হতে

আলোর লীলায় ধ্বনির স্রোতে

         যে বাণী তার আসে প্রাণে

তারি জবাব দিতে গিয়ে কী-যে জানায় কেই তা জানে।

এই - যে অবুঝ এই - যে বোবা মন

প্রাণের ' পরে ঢেউ জাগিয়ে কৌতুকে যে অধীর অনুক্ষণ,

           সর্ব দিকেই সর্বদা উন্মুখ,

আপনারই চাঞ্চল্য নিয়ে আপনি সমুৎসুক —

   নয় বিধাতার নবীন রচনা এ,

          ইহার যাত্রা আদিম যুগের নায়ে।

              বিশ্বকবির মানস-সরোবরে

                  প্রাতঃস্নানের পরে

প্রাণের সঙ্গে বাহির হল, তখন অন্ধকার,

         নিয়ে এল ক্ষীণ আলোটি তার।

  তারই প্রথম ভাষাবিহীন কূজনকাকলি যে

বনে বনে শাখায় পাতায় পুষ্পে ফলে বীজে

              অঙ্কুরে অঙ্কুরে

      উঠল জেগে ছন্দে সুরে সুরে।

      সূর্য-পানে অবাক আঁখি মেলি

      মুখরিত উচ্ছল তার কেলি।

নানারূপের খেলনা যে তার নানা বর্ণে আঁকে,

          বারেক খোলে, বারেক তারে ঢাকে।