পূরবী
নিরপরাধ পদাতিকের সর্বদেহে পাঁক দেওয়া।
তা ছাড়া সব পিসু মাছি কাশি হাঁচি ইত্যাদি,
কখনো বা খাওয়ার দোষে রুখে দাঁড়ায় পিত্তাদি,
এমনতরো ছোটোখাটো একটা কিম্বা অর্ধটা
যৎসামান্য উপদ্রবের নাই বা দিলাম ফর্দটা।
দোষ গাইতে চাই যদি তো তাল করা যায় বিন্দুকে—
মোটের উপর শিলঙ ভালোই, যাই না বলুক নিন্দুকে।
আমার মতে জগৎটাতে ভালোটারই প্রাধান্য—
মন্দ যদি তিন-চল্লিশ, ভালোর সংখ্যা সাতান্ন।
বর্ণনাটা ক্ষান্ত করি, অনেকগুলো কাজ বাকি,
আছে চায়ের নেমন্তন্ন, এখনো তার সাজ বাকি।

 

ছড়া কিম্বা কাব্য কভু লিখবে পরের ফরমাশে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জেনো নয়কো তেমন শর্মা সে।
তথাপি এই ছন্দ রচে করেছি কাল নষ্ট তো,
এইখানেতে কারণটি তার বলে রাখি স্পষ্টত—
তোমরা দুজন বয়সেতে ছোটোই হবে বোধ করি,
আর আমি তো পরমায়ুর ষাট দিয়েছি শোধ করি,
তবু আমার পক্ক কেশের লম্বা দাড়ির সম্ভ্রমে
আমাকে যে ভয় কর নি দুর্বাসা কি যম ভ্রমে,
মোর ঠিকানায় পত্র দিতে হয় নি কলম কম্পিত,
কবিতাতে লিখতে চিঠি হুকুম এল লম্ফিত—
এইটে দেখে মনটা আমার পূর্ণ হল উৎসাহে,
মনে হল, বৃদ্ধ আমি মন্দ লোকের কুৎসা এ।
মনে হল আজো আছে কম বয়সের রঙ্গিমা,
জরার কোপে দাড়ি-গোঁপে হয় নি জবড়-জঙ্গিমা।
তাই বুঝি সব ছোটো যারা তারা যে কোন্‌ বিশ্বাসে
একবয়সী বলে আমায় চিনেছে এক নিশ্বাসে।
এই ভাবনায় সেই হতে মন এমনিতরো খুশ আছে,
ডাকছে ভোলা ‘খাবার এল’— আমার কি আর হুঁশ আছে।
জানলা দিয়ে বৃষ্টিতে গা ভেজে যদি ভিজুক তো;
ভুলেই গেলাম লিখতে নাটক আছি আমি নিযুক্ত।
মনকে ডাকি, ‘হে আত্মারাম, ছুটুক তোমার কবিত্ব—
ছোট্ট দুটি মেয়ের কাছে ফুটুক রবির রবিত্ব।’