মিলন
শ্রীমতী ইন্দিরা মৈত্রের বিবাহ-উপলক্ষে

     সেদিন উষার নববীণাঝংকারে

           মেঘে মেঘে ঝরে সোনার সুরের কণা।

      ধেয়ে চলেছিলে কৈশোরপরপারে

           পাখিদুটি উন্মনা।

      দখিন বাতাসে উধাও ওড়ার বেগে

      অজানার মায়া রক্তে উঠিল জেগে

           স্বপ্নের-ছায়া-ঢাকা।

      সুরভবনের মিলনমন্ত্র লেগে

           কবে দুজনের পাখায় ঠেকিল পাখা।

      কেটেছিল দিন আকাশে হৃদয় পাতি

           মেঘের রঙেতে রাঙায়ে দোঁহার ডানা।

      আছিলে দুজনে অপারে ওড়ার সাথী,

           কোথাও ছিল না মানা।

      দূর হতে এই ধরণীর ছবিখানি

      দোঁহার নয়নে অমৃত দিয়েছে আনি —

           পুষ্পিত শ্যামলতা।

      চারি দিক হতে বিরাটের মহাবাণী

           শুনাল দোঁহারে ভাষার অতীত কথা।

 

      মেঘলোকে সেই নীরব সম্মিলনী

                 বেদনা আনিল কী অনির্বচনীয়।

      দোঁহার চিত্তে উচ্ছ্বসি উঠে ধ্বনি —

                 ‘ প্রিয়, ওগো মোর প্রিয়। '

      পাখার মিলন অসীমে দিয়েছে পাড়ি,

      সুরের মিলনে সীমারূপ এল তার ই,

                 এলে নামি ধরা-পানে।

      কুলায়ে বসিলে অকূল শূন্য ছাড়ি,

                  পরানে পরানে গান মিলাইলে গানে।