মৃত্যুঞ্জয়

            দূর হতে ভেবেছিনু মনে

দুর্জয় নির্দয় তুমি, কাঁপে পৃথ্বী তোমার শাসনে।

                 তুমি বিভীষিকা,

দুঃখীর বিদীর্ণ বক্ষে জ্বলে তব লেলিহান শিখা।

দক্ষিণ হাতের শেল উঠেছে ঝড়ের মেঘ-পানে,

                 সেথা হতে বজ্র টেনে আনে।

ভয়ে ভয়ে এসেছিনু দুরুদুরু বুকে

                        তোমার সম্মুখে

তোমার ভ্রূকুটিভঙ্গে তরঙ্গিল আসন্ন উৎপাত —

                 নামিল আঘাত।

                 পাঁজর উঠিল কেঁপে,

                       বক্ষে হাত চেপে

           শুধালেম, ‘ আরো কিছু আছে নাকি,

                       আছে বাকি

                               শেষ বজ্রপাত?'

                       নামিল আঘাত।

      এইমাত্র?   আর কিছু নয়?

                 ভেঙে গেল ভয়।

      যখন উদ্যত ছিল তোমার অশনি

তোমারে আমার চেয়ে বড়ো ব ' লে নিয়েছিনু গনি।

      তোমার আঘাত-সাথে নেমে এলে তুমি

           যেথা মোর আপনার ভূমি।

                 ছোটো হয়ে গেছ আজ।

                       আমার টুটিল সব লাজ।

                 যত বড়ো হও,

      তুমি তো মৃত্যুর চেয়ে বড়ো নও।

আমি মৃত্যু-চেয়ে বড়ো এই শেষ কথা বলে

           যাব আমি চলে।