বকুল-বনের পাখি
শোনো শোনো ওগো বকুল-বনের পাখি,
দেখো তো, আমায় চিনিতে পারিবে না কি।
      নই আমি কবি, নই জ্ঞান-অভিমানী,
      মান-অপমান কী পেয়েছি নাহি জানি,
      দেখেছ কি মোর দূরে-যাওয়া মনখানি—
               উড়ে যাওয়া মোর আঁখি?
    আমাতে কি কিছু দেখেছ তোমারি সম,
    অসীম-নীলিমা-তিয়াষি বন্ধু মম?

 

শোনো শোনো ওগো বকুল-বনের পাখি,
কবে দেখেছিলে মনে পড়ে সে কথা কি?
        বালক ছিলাম, কিছু নহে তার বাড়া,
        রবির আলোর কোলেতে ছিলেম ছাড়া,
        চাঁপার গন্ধ বাতাসের-প্রাণ-কাড়া
                 যেত মোরে ডাকি ডাকি।
     সহজ রসের ঝর্না-ধারার ‘পরে
     গান ভাসাতেম সহজ সুখের ভরে।

 

শোনো শোনো ওগো বকুল-বনের পাখি,
কাছে এসেছিনু ভুলিতে পারিবে তা কি।
        নগ্ন পরান লয়ে আমি কোন্‌ সুখে
        সারা আকাশের ছিনু যেন বুকে বুকে,
        বেলা চলে যেত অবিরত কৌতুকে
                 সব কাজে দিয়ে ফাঁকি।
     শ্যামলা ধরার নাড়ীতে যে তাল বাজে
     নাচিত আমার অধীর মনের মাঝে।

 

শোনো শোনো ওগো বকুল-বনের পাখি,
দূরে চলে এনু, বাজে তার বেদনা কি?
        আষাঢ়ের মেঘ রহে না কি মোরে চাহি।