সান্ত্বনা

    সকালের আলো এই বাদলবাতাসে

                 মেঘে রুদ্ধ হয়ে আসে

           ভাঙা কণ্ঠে কথার মতন।

                    মোর মন

           এ অস্ফুট প্রভাতের মতো

      কী কথা বলিতে চায়, থাকে বাক্যহত।

              মানুষের জীবনের মজ্জায় মজ্জায়

      যে দুঃখ নিহিত আছে অপমানে শঙ্কায় লজ্জায়,

                কোনো কালে যার অন্ত নাই,

                      আজি তাই

      নির্যাতন করে মোরে। আপনার দুর্গমের মাঝে

           সান্ত্বনার চির-উৎস কোথায় বিরাজে,

       যে উৎসের গূঢ় ধারা বিশ্বচিত্ত-অন্তঃস্তরে

                 উন্মুক্ত পথের তরে

                       নিত্য ফিরে যুঝে

               আমি তারে মরি খুঁজে।

                       আপন বাণীতে

               কী পুণ্যে বা পারিব আনিতে

      সেই সুগম্ভীর শান্তি, নৈরাশ্যের তীব্র বেদনারে

           স্তব্ধ যা করিতে পারে।

                 হায় রে ব্যথিত,

      নিখিল-আত্মার কেন্দ্রে বাজে অকথিত

      আরোগ্যের মহামন্ত্র, যার গুণে

                 সৃজনের হোমের আগুনে

      নিজেরে আহুতি দিয়া নিত্য সে নবীন হয়ে উঠে —

      প্রাণেরে ভরিয়া তুলে নিত্যই মৃত্যুর করপুটে।

           সেই মন্ত্র শান্ত মৌনতলে

      শুনা যায় আত্মহারা তপস্যার বলে।

           মাঝে-মাঝে পরম বৈরাগী

      সে মন্ত্র চেয়েছে দিতে সর্বজন লাগি।