নবজাতক

         স্পর্শ দেয় মনে, রক্ত উঠে আবর্তিয়া বুকে —

                       সে যুগের সুদূর সম্মুখে

         স্তব্ধ হয়ে ভুলি এই কৃপণ কালের দৈন্যপাশে-

              জর্জরিত, নতশির অদৃষ্টের অট্টহাসে,

              গলবদ্ধ পশুশ্রেণীসম চলে দিন পরে দিন

                                লজ্জাহীন।

                       জীবনমৃত্যুর দ্বন্দ্ব-মাঝে

    সেদিন যে দুন্দুভি মন্দ্রিয়াছিল তার প্রতিধ্বনি বাজে

         প্রাণের কুহরে গুমরিয়া। নির্ভয় দুর্দান্ত খেলা,

    মনে হয়, সেই তো সহজ, দূরে নিক্ষেপিয়া ফেলা

আপনারে নিঃসংশয় নিষ্ঠুর সংকটে। তুচ্ছ প্রাণ

    নহে তো সহজ ; মৃত্যুর বেদীতে যার কোনো দান

নাই কোনো কালে সেই তো দুর্ভর অতি,

    আপনার সঙ্গে নিত্য বাল্যপনা দুঃসহ দুর্গতি।

প্রচণ্ড সত্যেরে ভেঙে গল্পে রচে অলস কল্পনা

              নিষ্কর্মার স্বাদু উত্তেজনা,

    নাট্যমঞ্চে ব্যঙ্গ করি বীরসাজে

তারস্বর আস্ফালনে উন্মত্ততা করে কোন্‌ লাজে।

        তাই ভাবি হে রাজপুতানা,

     কেন তুমি মানিলে না যথাকালে প্রলয়ের মানা,

          লভিলে না বিনষ্টির শেষ স্বর্গলোক ;

                   জনতার চোখ

                       দীপ্তিহীন

        কৌতুকের দৃষ্টিপাতে পলে পলে করে যে মলিন।

              শঙ্করের তৃতীয় নয়ন হতে

        সম্মান নিলে না কেন যুগান্তের বহ্নির আলোতে।