পূরবী
বারবার কচি ঘাস কোথা হতে আসে মোর কোলে,
চলে যায়— সেও যায় যে যায় তাহারে দ’লে দ’লে;
বিচিত্রের প্রয়োজনে অবিচিত্র আমি শূন্যময়—
                      কিছু নাহি রয়।

 

বসিতে না চাহে কেহ, কাহারো কিছু না সহে দেরি—
                      কারো নই, তাই সকলেরই।
বামে মোর শস্যক্ষেত্র, দক্ষিণে আমার লোকালয়—
প্রাণ সেথা দুই হস্তে বর্তমান আঁকড়িয়া রয়।
আমি সর্ববন্ধহীন নিত্য চলি তারি মধ্যখানে।
                      ভবিষ্যের পানে।

 

তাই আমি চিররিক্ত, কিছু নাহি থাকে মোর পুঁজি—
                      কিছু নাহি পাই, নাহি খুঁজি।
আমারে ভুলিবে ব’লে যাত্রীদল গান গাহে সুরে—
পারি নে রাখিতে তাহা, সে গান চলিয়া যায় দূরে।
বসন্ত আমার বুকে আসে যবে ধুলায় আকুল
                      নাহি দেয় ফুল।

 

পৌঁছিয়া ক্ষতির প্রান্তে বিত্তহীন একদিন শেষে
                      শয্যা পাতে মোর পাশে এসে।
পান্থের পাথেয় হতে খসে পড়ে যাহা ভাঙাচোরা
ধূলিরে বঞ্চনা করি কাড়িয়া তুলিয়া লয় ওরা;
আমি রিক্ত, ওরা রিক্ত, মোর’পরে নাই প্রীতিলেশ—
                      মোরে করে দ্বেষ।

 

শুধু শিশু বোঝে মোরে, আমারে সে জানে ছুটি ব’লে—
                      ঘর ছেড়ে আসে তাই চলে।
নিষেধ বা অনুমতি মোর মাঝে না দেয় পাহারা,
আবশ্যকে নাহি রচে বিবিধের বস্তুময় কারা,
বিধাতার মতো শিশু লীলা দিয়ে শূন্য দেয় ভরে—