সাড়ে নটা

     সাড়ে নটা বেজেছে ঘড়িতে ;

         সকালের মৃদু শীতে

     তন্দ্রাবেশে হাওয়া যেন রোদ পোহাইছে

         পাহাড়ের উপত্যকা-নীচে

              বনের মাথায়

         সবুজের আমন্ত্রণ-বিছানো পাতায়।

     বৈঠকখানার ঘরের রেড়িয়োতে

              সমুদ্রপারের দেশ হতে

          আকাশে প্লাবন আনে সুরের প্রবাহে,

     বিদেশিনী বিদেশের কণ্ঠে গান গাহে

              বহু যোজনের অন্তরালে।

সব তার লুপ্ত হয়ে মিলেছে কেবল সুরে তালে।

         দেহহীন পরিবেশহীন

              গীতস্পর্শ হতেছে বিলীন

                   সমস্ত চেতনা ছেয়ে।

           যে বেলাটি বেয়ে

                   এল তার সাড়া

    সে আমার দেশের সময়-সূত্র-ছাড়া।

একাকিনী, বহি রাগিণীর দীপশিখা

               আসিছে অভিসারিকা

                   সর্বভারহীনা ;

  অরূপা সে, অলক্ষিত আলোকে আসীনা।

         গিরিনদীসমুদ্রের মানে নি নিষেধ,

                    করিয়াছে ভেদ

         পথে পথে বিচিত্র ভাষার কলরব,

পদে পদে জন্ম-মৃত্যু বিলাপ-উৎসব।

         রণক্ষেত্রে নিদারুণ হানাহানি,

লক্ষ লক্ষ গৃহকোণে সংসারের তুচ্ছ কানাকানি,

              সমস্ত সংসর্গ তার

         একান্ত করেছে পরিহার।