আকাশপ্রদীপ

                            চারি দিকে,

            ধ্বনিলিপি দিয়ে তার বিদায়স্বাক্ষর দেয় লিখে।

                 তুমি যেন রজনীর জ্যোতিষ্কের শেষ পরিচয়

                       শুকতারা, তোমার উদয়

                            অস্তের খেয়ায় চ ' ড়ে আসা,

                       মিলনের সাথে বহি বিদায়ের ভাষা।

                                  তাই বসে একা

                       প্রথম দেখার ছন্দে ভরি লই সব-শেষ দেখা।

                                   সেই দেখা মম

                                        পরিস্ফুটতম।

                 বসন্তের শেষমাসে শেষ শুক্লতিথি

                            তুমি এলে তাহার অতিথি,

                 উজাড় করিয়া শেষ দানে

           ভাবের দাক্ষিণ্য মোর অন্ত নাহি জানে।

                  ফাল্গুনের অতিতৃপ্তি ক্লান্ত হয়ে যায়,

                       চৈত্রে সে বিরলরসে নিবিড়তা পায়,

                 চৈত্রের সে ঘন দিন তোমার লাবণ্যে মূর্তি ধরে ;

           মিলে যায় সারঙের বৈরাগ্যরাগের শান্তস্বরে,

                 প্রৌঢ় যৌবনের পূর্ণ পর্যাপ্ত মহিমা

                       লাভ করে গৌরবের সীমা।

 

           হয়তো এ-সব ব্যাখ্যা স্বপ্ন-অন্তে চিন্তা ক'রে বলা,

                 দাম্ভিক বুদ্ধিরে শুধু ছলা —

                       বুঝি এর কোনো অর্থ নাইকো কিছুই।

           জ্যৈষ্ঠ-অবসানদিনে আকস্মিক জুঁই

                        যেমন চমকি জেগে উঠে

                 সেইমতো অকারণে উঠেছিল ফুটে,

                       সেই চিত্রে পড়েছিল তার লেখা

           বাক্যের তুলিকা যেথা স্পর্শ করে অব্যক্তের রেখা।

                       পুরুষ যে রূপকার,

           আপনার সৃষ্টি দিয়ে নিজেরে উদ্‌ভ্রান্ত করিবার

                            অপূর্ব উপকরণ