পুনশ্চ

    রঙরেজিনী দেখল তারি কোণে

        লেখা আছে একটি শ্লোকের একটি চরণ —

           ‘তোমার শ্রীপদ মোর ললাটে বিরাজে'।

        বসে বসে ভাবল অনেকক্ষণ,

    ঘুঘু ডাকতে লাগল আমের ডালে।

রঙিন সুতো ঘরের থেকে এনে

    আরেক চরণ লিখে দিল —

        ‘পরশ পাই নে তাই হৃদয়ের মাঝে'।

        দুদিন গেল কেটে।

    শঙ্কর এল রঙরেজির ঘরে।

শুধালো, পাগড়িতে কার হাতের লেখা?

           জসীমের ভয় লাগল মনে।

        সেলাম করে বললে, ‘ পণ্ডিতজি,

               অবুঝ আমার মেয়ে,

                   মাপ করো ছেলেমানুষি।

           চলে যাও রাজসভায় —

সেখানে এ লেখা কেউ দেখবে না, কেউ বুঝবে না। '

    শঙ্কর আমিনার দিকে চেয়ে বললে,

           ‘ রঙরেজিনী,

অহংকারের - পাকে - ঘেরা ললাট থেকে নামিয়ে এনেছ

    শ্রীচরণের স্পর্শখানি হৃদয়তলে

        তোমার হাতের রাঙা রেখার পথে।

           রাজবাড়ির পথ আমার হারিয়ে গেল,

                   আর পাব না খুঁজে। '