সেঁজুতি

      রাজা মহারাজা মিলায় শূন্যে ধুলার নিশান তুলে,

      তারা দেখা দিয়ে চলে যায় যবে ফুটে ওঠে ফুলে ফুলে।

             থাকে নাই থাকে কিছুতেই নেই ভয়,

      যাওয়ায় আসায় দিয়ে যায় ওরা নিত্যের পরিচয়।

             অজানা পথের নামহারা ওরা লজ্জা দিয়েছে মোরে

      হাটে বাটে যবে ফিরেছি কেবল নামের বেসাতি করে।

 

 

          আমার দুয়ারে আঙিনায় ধারে ওই চামেলির লতা

                   কোনো দুর্দিনে করে নাই কৃপণতা।

          ওই-যে শিমূল, ওই-যে সজিনা, আমারে বেঁধেছে ঋণে —

                   কত-যে আমার পাগলামি-পাওয়া দিনে

কেটে গেছে বেলা শুধু চেয়ে-থাকা মধুর মৈতালিতে,

          নীল আকাশের তলায় ওদের সবুজ বৈতালিতে।

                  সকালবেলার প্রথম আলোয় বিকালবেলার ছায়ায়

          দেহপ্রাণমন ভরেছে সে কোন্‌ অনাদি কালের মায়ায়।

                   পেয়েছি ওদের হাতে

                দূর জনমের আদিপরিচয় এই ধরণীর সাথে।

অসীম আকাশে যে প্রাণ-কাঁপন অসীম কালের বুকে

          নাচে অবিরাম, তাহারি বারতা শুনেছি ওদের মুখে।

                    যে মন্ত্রখানি পেয়েছি ওদের সুরে

          তাহার অর্থ মৃত্যুর সীমা ছাড়ায়ে গিয়েছে দূরে।

                   সেই সত্যেরই ছবি

                তিমিরপ্রান্তে চিত্তে আমার এনেছে প্রভাতরবি।

          সে রবিরে চেয়ে কবির সে বাণী আসে অন্তরে নামি —

‘ যে আমি রয়েছে তোমার আমায় সে আমি আমারি আমি '।

          সে আমি সকল কালে,  

              সে আমি সকল খানে,

প্রেমের পরশে সে অসীম আমি বেজে ওঠে মোর গানে।