তীর্থযাত্রিণী

          তীর্থের যাত্রিণী ও যে, জীবনের পথে

শেষ আধক্রোশটুকু টেনে টেনে চলে কোনোমতে।

                   হাতে নামজপ-ঝুলি

          পাশে তার রয়েছে পুঁটুলি।

ভোর হতে ধৈর্য ধরি বসি ইস্টেশনে

          অস্পষ্ট ভাবনা আসে মনে —

আর কোনো ইস্টেশনে আছে যেন আর কোনো ঠাঁই,

              যেথা সব ব্যর্থতাই

                   আপনায়

           হারানো অর্থেরে ফিরে পায়,

                   যেথা গিয়ে ছায়া

কোনো-এক রূপ ধরি পায় যেন কোনো-এক কায়া।

          বুকের ভিতরে ওর পিছু হতে দেয় দোল

                   আশৈশব-পরিচিত দূর সংসারের কলরোল

          প্রত্যাখ্যাত জীবনের প্রতিহত আশা

অজানার নিরুদ্দেশে প্রদোষ খুঁজিতে চলে বাসা।

 

 

যে পথে সে করেছিল যাত্রা একদিন

                        সেখানে নবীন

           আলোকে আকাশ ওর মুখ চেয়ে উঠেছিল হেসে।

               সে পথে পড়েছে আজ এসে

                    অজানা লোকের দল,

তাদের কন্ঠের ধ্বনি ওর কাছে ব্যর্থ কোলাহল।

                    যে যৌবনখানি

একদিন পথে যেতে বল্লভেরে দিয়েছিল আনি

             মধুমদিরার রসে বেদনার নেশা

                    দুঃখে-সুখে-মেশা

সে রসের রিক্ত পাত্রে আজ শুষ্ক অবহেলা,

মধুপগুঞ্জনহীন যেন ক্লান্ত হেমন্তের বেলা।