কাশী
কাশীর গল্প শুনেছিলুম যোগীনদাদার কাছে,
              পষ্ট মনে আছে।
আমরা তখন ছিলাম না কেউ, বয়েস তাঁহার সবে
              বছর-আষ্টেক হবে।
              সঙ্গে ছিলেন খুড়ি,
মোরব্বা বানাবার কাজে ছিল না তাঁর জুড়ি।
দাদা বলেন, আমলকি বেল পেঁপে সে তো আছেই,
এমন কোনো ফল ছিল না এমন কোনো গাছেই
তাঁর হাতে রস জমলে লোকের গোল না ঠেকত — এটাই
              ফল হবে কি মেঠাই।
রসিয়ে নিয়ে চালতা যদি মুখে দিতেন গুঁজি
মনে হত বড়োরকম রসগোল্লাই বুঝি।
কাঁঠাল বিচিত্র মোরব্বা যা বানিয়ে দিতেন তিনি
পিঠে ব ' লে পৌষমাসে সবাই নিত কিনি।
দাদা বলেন, “ মোরব্বাটা হয়তো মিছেমিছিই,
কিন্তু মুখে দিতে যদি, বলতে কাঁঠাল বিচিই। ”
         মোরব্বাতে ব্যাবসা গেল জ ' মে
         বেশ কিঞ্চিৎ টাকা জমল ক্রমে।
একদিন এক চোর এসেছে তখন অনেক রাত,
জানলা দিয়ে সাবধানে সে বাড়িয়ে দিল হাত।
খুড়ি তখন চাটনি করতে তেল নিচ্ছেন মেপে,
ধড়াস করে চোরের হাতে জানলা দিলেন চেপে।
চোর বললে, ‘ উহু উহু '; খুড়ি বললেন, ‘ আহা,
বাঁ হাত মাত্র, এইখানেতেই থেকে যাক-না তাহা। '
কেঁদে-কেটে কোনোমতে চোর তো পেল খালাস ;
খুড়ি বললেন, ‘ মরবি, যদি এ ব্যাবসা তোর চালাস। '
 
দাদা বললেন, “ চোর পালালো, এখন গল্প থামাই,
ছ'দিন হয় নি ক্ষৌর করা, এবার গিয়ে কামাই। ”
আমরা টেনে বসাই ; বলি, “ গল্প কেন ছাড়বে। ”