১০

বিপুলা এ পৃথিবীর কতটুকু জানি।

দেশে দেশে কত-না নগর রাজধানী —

মানুষের কত কীর্তি, কত নদী গিরি সিন্ধু মরু,

কত-না অজানা জীব, কত-না অপরিচিত তরু

রয়ে গেল অগোচরে। বিশাল বিশ্বের আয়োজন ;

মন মোর জুড়ে থাকে অতি ক্ষুদ্র তারি এক কোণ।

সেই ক্ষোভে পড়ি গ্রন্থ ভ্রমণবৃত্তান্ত আছে যাহে

অক্ষয় উৎসাহে —

যেথা পাই চিত্রময়ী বর্ণনার বাণী

কুড়াইয়া আনি।

জ্ঞানের দীনতা এই আপনার মনে

পূরণ করিয়া লই যত পারি ভিক্ষালব্ধ ধনে।

 

আমি পৃথিবীর কবি, যেথা তার যত উঠে ধ্বনি

আমার বাঁশির সুরে সাড়া তার জাগিবে তখনি,

এই স্বরসাধনায় পৌঁছিল না বহুতর ডাক —

রয়ে গেছে ফাঁক।

কল্পনায় অনুমানে ধরিত্রীর মহা-একতান

কত-না নিস্তব্ধ ক্ষণে পূর্ণ করিয়াছে মোর প্রাণ।

দু্‌র্গম তুষারগিরি অসীম নিঃশব্দ নীলিমায়

অশ্রুত যে গান গায়

আমার অন্তরে বার বার

পাঠায়েছে নিমন্ত্রণ তার।

দক্ষিণমেরুর ঊর্ধ্বে যে অজ্ঞাত তারা

মহাজনশূন্যতায় রাত্রি তার করিতেছে সারা,

সে আমার অর্ধরাত্রে অনিমেষ চোখে

অনিদ্রা করেছে স্পর্শ অপূর্ব আলোকে।

সুদূরের মহাপ্লাবী প্রচন্ড নির্ঝর

মনের গহনে মোর পাঠয়েছে স্বর।

প্রকৃতির ঐকতানস্রোতে

নানা কবি ঢালে গান নানা দিক হতে ;