সাত

চোখ ঘুমে ভোরে আসে,

     মাঝে-মাঝে উঠছি জেগে

যেমন নববর্ষার প্রথম পসলা বৃষ্টির জল

     মাটি চুঁইয়ে পৌঁছয় গাছের শিকড়ে এসে,

তেমনি তরুণ হেমন্তের আলো ঘুমের ভিতর দিয়ে

     লেগেছে আমার অচেতন প্রাণের মূলে।

   বেলা এগোল তিন প্রহরের কাছে।

পাতলা সাদা মেঘের টুকরো

        স্থির হয়ে ভাসছে কার্তিকের রোদ্দুরে —

            দেবশিশুদের কাগজের নৌকো।

          পশ্চিম থেকে হাওয়া দিয়েছে বেগে ,

          দোলাদুলি লেগেছে তেঁতুলগাছের ডালে।

           উত্তরে গোয়ালপাড়ার রাস্তা,

  গোরুর গাড়ি বিছিয়ে দিল গেরুয়া ধুলো

                       ফিকে নীল আকাশে।

 

মধ্যদিনের নিঃশব্দ প্রহরে

        অকাজে ভেসে যায় আমার মন

             ভাবনাহীন দিনের ভেলায়।

   সংসারের ঘাটের থেকে রশি-ছেঁড়া এই দিন

     বাঁধা নেই কোনো প্রয়োজনে।

     রঙের নদী পেরিয়ে সন্ধ্যাবেলায় অদৃশ্য হবে

        নিস্তরঙ্গ ঘুমের কালো সমুদ্রে।

 

ফিকে কালিতে এই দিনটার চিহ্ন পড়ল কালের পাতায়,

       দেখতে দেখতে যাবে সে মিলিয়ে।

    ঘন অক্ষরে যে-সব দিন আঁকা পড়ে

         মানুষের ভাগ্যলিপিতে,

       তার মাঝখানে এ রইল ফাঁকা।

    গাছের শুকনো পাতা মাটিতে ঝরে —