পনেরো

ওরা অন্ত্যজ, ওরা মন্ত্রবর্জিত।

           দেবালয়ের মন্দিরদ্বারে

              পূজা-ব্যবসায়ী ওদের ঠেকিয়ে রাখে।

ওরা দেবতাকে খুঁজে বেড়ায় তাঁর আপন স্থানে

           সকল বেড়ার বাইরে

                      সহজ ভক্তির আলোকে,

           নক্ষত্রখচিত আকাশে,

                       পুষ্পখচিত বনস্থলীতে,

           দোসর-জনার মিলন-বিরহের

                      গহন বেদনায়।

           যে দেখা বানিয়ে-দেখা বাঁধা ছাঁচে,

                      প্রাচীর ঘিরে, দুয়ার তুলে,

                          সে দেখার উপায় নেই ওদের হাতে।

কতদিন দেখেছি ওদের সাধককে

           একলা প্রভাতের রৌদ্রে সেই পদ্মানদীর ধারে,

                      যে নদীর নেই কোনো দ্বিধা

           পাকা দেউলের পুরাতন ভিত ভেঙে ফেলতে।

দেখেছি একতারা-হাতে চলেছে গানের ধারা বেয়ে

   মনের মানুষকে সন্ধান করবার

              গভীর নির্জন পথে।

 

      কবি আমি ওদের দলে —

              আমি ব্রাত্য, আমি মন্ত্রহীন,

                 দেবতার বন্দীশালায়

                         আমার নৈবেদ্য পৌঁছল না।

              পূজারি হাসিমুখে মন্দির থেকে বাহির হয়ে আসে,        

                 আমাকে শুধায়, “ দেখে এলে তোমার দেবতাকে?”

                         আমি বলি, “ না ”।

         অবাক হয় শুনে ; বলে, “ জানা নেই পথ?”

                          আমি বলি, “ না। ”