তার্কিক

যে পাড়ার ক্রোশ-তিনেকের মধ্যে তার্কিক লোকের গন্ধ আছে, সেখানে বোধ করি কোন ভাবুক লোক তিষ্ঠিতে পারেন না। বোধ করি তার্কিক লোকের মুখ দেখিলেই ভাবের বিকাশ বন্ধ হইয়া যায়। অতএব যাঁহারা ভাবের চর্চা করিতে চান, তাঁহারা কাছাকাছি এমন বন্ধু রাখিবেন যাঁহাদের সহিত মতের মিল আছে। অনুরাগের আবহাওয়ার মধ্যে থাকিলে মনের গূঢ় ক্ষমতাগুলি যেমন সতেজে মাটি ফুঁড়িয়া উঠে, এমন আর কোথাও নয়।

একটা গাছে কতশত বীজ জন্মে। তাহার মধ্যে সবগুলা কিছু গাছ হয় না। কিন্তু গুটিকত গাছ জন্মাইবার উদ্দেশে বিস্তর নিষ্ফল বীজ জন্মানো আবশ্যক। আমাদেরও সকল ভাব কিছু সফল হইবে না। কিন্তু ভাবের প্রচুরতা আবশ্যক। গোটাকতক থাকিবে, অনেকগুলি মরিবে। কিন্তু প্রতিকূলতার প্রখর প্রভাবে যদি ভাবের বিকাশ একেবারেই বন্ধ হয় তবে আর কী হইল?

তাই জিজ্ঞাসা করিতেছি সাহিত্যে প্রতিকূল সমালোচনা কি ভালো? ভালো বইয়ের ভালো সমালোচনা ভাল, কুরুচিবিকাশক হানিজনক বইয়ের নিন্দা করাও দোষের নহে,কিন্তু লেখকের ক্ষমতার অভাবে বা বুদ্ধির দোষে অসম্পূর্ণ গ্রন্থগুলিকে কঠোর ভাবে সমালোচনা করিলে তাহাতে কী ভাল হয় বুঝিতে পারি না।