শৈশবসঙ্গীত
                        আমি যাব গো!—
                প্রভাতের গান আর জীবনের গান
                দেখি যদি পারি তবে আমি গাব গো,
                        আমি যাব গো!
                যদিও শকতি নাই এ দীন চরণে আর,
                যদিও নাইক জ্যোতি এ পোড়া নয়নে আর,
                শরীর সাধিতে নারে মন মোর যাহা চায়,
                শতবার আশা করি শতবার ভেঙ্গে যায়—
                        আমি যাব গো!
                সারারাত ব’সে আছি, আঁখি মোর অনিমেষ।
                প্রণের ভিতর দিকে       চেয়ে দেখি অনিমিখে,
                চারি দিকে  যৌবনের ভগ্ন জীর্ণ অবশেষ।
                ভগ্ন আশা ভগ্ন সুখ—  ধূলিমাখা জীর্ণ স্মৃতি।
                সামান্য বায়ুর দাপে       ভিত্তি থর থর কাঁপে,
                একটি আধটি ইঁট খসিতেছে নিতি নিতি—
                        আমি যাব গো!
                নবীন আশায় মাতি পথিকেরা যায়,
                        কত গান গায়!—
                এ ভগ্ন প্রমোদালয়ে     পশে সুর ভয়ে ভয়ে,
                        প্রতিধ্বনি মৃদুল জাগায়—
                তারা  ভগ্ন ঘরে ঘরে ঘুরিয়া বেড়ায়!
                তখন নয়ন মুদি কত স্বপ্ন দেখি!
                        কত স্বপ্ন হায়!
                কত দীপালোক — কত ফুল—কত পাখী!
                কত সুধামাখা কথা, কত হাসিমাখা আঁখি!
                কত পুরাতন স্বর কে জানে কাহারে ডাকে!
                কত কচি হাত এসে   খেলে এ পলিত কেশে,
                কত কচি রাঙ্গা মুখ কপোলে কপোল রাখে!
                        কত স্বপ্ন হায়!
                হৃদয় চমকি উঠি চারি দিকে চায়,