শৈশবসঙ্গীত
                দেখে গো কঙ্কালরাশি হেথায় হোথায়!
                        সে দীপ নিভিয়া গেছে,
                        সে ফুল শুখায়ে গেছে,
                        সে পাখী মরিয়া গেছে—
                সুধামাখা কথাগুলি চিরতরে নীরবিত
                হাসিমাখা আঁখিগুলি চিরতরে নিমীলিত।—
                        আমি যাব গো!
                দেখি যদি পারি তবে প্রভাতের গান
                        আমি গাব গো!
                এ ভগ্ন বীণার তন্ত্রী ছিঁড়েছে সকল আর—
                        দুটি বুঝি বাকি আছে তার!
                এখানো প্রভাতে যদি হরিষিতপ্রাণ
                এ বীণা বাজাতে চাই— চমকি শুনিতে পাই
                সহসা গাহিয়া উঠে যৌবনেরি গান
                        সেই দুটি তার।
                টুটে গেছে, ছিঁড়ে গেছে বাকি যত আর।
                যুগ-যুগান্তের এই শুষ্ক জীর্ণ গাছে
                        দুটি শাখা আছে—
                এখনো যদি গো শুনে বসন্তপাখীর গীত,
                এখনো পরশে যদি বসন্তমলয়বায়,
                        দু-চারিটি কিশলয়
                        এখনো বাহির হয়,
                এখনো এ শুষ্ক শাখা হেসে উঠে মুকুলিত,
                একটি ফুলের কুঁড়ি ফুটিয়া উঠিতে চায়,
                ফুটে-ফুটো হয় যবে ঝরিয়া মরিয়া যায়।
                এ ভগ্ন বীণার দুটি ছিন্নশেষ তারে
                        পরশ করেছে আজি গো—
                নবযৌবনের গান ললিতরাগিণী
                        সহসা উঠেছে বাজি গো।—
                এই ভগ্ন ঘরে ঘরে      প্রতিধ্বনি খেলা করে