শৈশবসঙ্গীত
                এক দিন যে সঙ্গীত জাগাত রজনী
                        তারি প্রতিধ্বনি,
                যে মঙ্গলঘট ছিল দুয়ারের পাশ
                        তারি ভগ্ন রাশ!
                সে প্রেতভূমিতে আমি ছিনু রাত্রি দিন
                        প্রেতসহচর!
                কেহ বা সমুখে আসি দাঁড়ায়ে কাঁদিত
                        শীর্ণকলেবর।
                কেহ বা নীরবে আসি পাশেতে বসিয়া,
                দিন নাই রাত্রি নাই, নয়নে পলক নাই,
                শুধু ব’সে ছিল এই  মুখেতে চাহিয়া।
                সন্ধ্যা হ’লে শুইতাম, দীপহীন শূন্য ঘর—
                        কেহ কাঁদে, কেহ হাসে,
                        কেহ পায়, কেহ পাশে,
                কেহ বা শিয়রে ব’সে শত প্রেতসহচর!
                কেহ শত সঙ্গী ল’য়ে     আকাশমাঝারে র’য়ে
                ভাবশূন্য স্তব্ধমুখে করিত গো নেত্রপাত—
                এমনি  কাটিত দিন, এমনি কাটিত রাত!
                কেন হেন দেশ ত্যজি আইলাম হা— রে—
                ফুরাত জীবনদিন        চিন্তাহীন ভয়হীন,
                মরিয়া গো রহিতাম মৃত সে সংসারে—
                মৃত  আশা, মৃত সুখ, মৃতের মাঝারে!
                আবার নূতন করি জীবনের খেলা
                আরম্ভ করিতে কি গো সময় আমার?
                ফুরায়ে গিয়েছে যবে জীবনের বেলা
                প্রভাতের অভিনয় সাজে কি গো আর?
                        তবে কেন চলিলাম?
                সে দিনের যত কথা কেন ভুলিলাম?
                এখন ফিরিতে নারি অতি দূর—দূর পথ,
                সমুখে চলিতে নারি শ্রান্ত দেহ জড়বৎ,