শেষ কথা

“বেশি কঠোর হবে? ”

“আপনি মনে মনেই জানেন।”

“থাক্‌, থাক্‌, তা হলে বলে কাজ নাই। এখন বাড়ি যান।”

আমি বললুম, “তার আগে সব কথাটা শেষ করে নিই। কাল আপনাদের ওখানে আমার নেমন্তন্নটা নামকর্তন-অনুষ্ঠানের। কাল থেকে নবীনমাধব নামটা থেকে কাটা পড়বে ডাক্তার সেনগুপ্ত। সূর্যের কাছাকাছি এলে ধূমকেতুর কেতুটা পায় লোপ, মুণ্ডুটা থাকে বাকি।”

এইখানে শেষ হল আমার বড়োদিন। দেখলুম বার্ধক্যের কী সৌম্যসুন্দর মূর্তি। পালিশ-করা লাঠি হাতে, গলায় শুভ্র পাটকরা, চাদর, ধুতি যত্নে কোঁচানো, গায়ে তসরের জামা, মাথায় শুভ্র চুল বিরল হয়ে এসেছে কিন্তু পরিপাটি করে আঁচড়ানো। স্পষ্ট বোঝা যায়, নাতনির হাতের শিল্পকার্য এঁর বেশভূষণে এঁর দিনযাত্রায়। অতিলালনের অত্যাচার ইনি সস্নেহে সহ্য করেন, খুশি রাখবার জন্যে নাতনিটিকে।

এই গল্পের পক্ষে অধ্যাপকের ব্যাবহারিক নাম অনিলকুমার সরকার। তিনি গত জেনেরেশনের কেম‍্‍ব্রিজের বড়ো পদবীধারী। মাস আষ্টেক আগে কোনো কলেজের অধ্যক্ষপদ ত্যাগ করে এখানকার এস্টেটের একটা পোড়ো বাড়ি ভাড়া নিয়ে নিজের খরচে সেটা বাসযোগ্য করেছেন।