মুক্তির উপায়

ফকির। ও সর্বনাশ! আমাকে মেরে ফেললেও এখান থেকে নড়ব না। (গাছের গুঁড়ি আঁকড়িয়ে ধ'রে) কিছুতেই না।

হরিশ উকিল। জান আমি কে? পূর্ব-আশ্রমে জানতে। অনেক সাধুকে জেলে পাঠিয়েছি। আমি হরিশ উকিল। জান? তোমার দুই স্ত্রী!

ফকির। এখানে এসে প্রথম জানলুম।

হরিশ। আর, তোমার চার মেয়ে তিন ছেলে।

ফকির। আপনারা জানেন, আমি কিছুই জানি নে।

হরিশ। এদের ভরণপোষণের ভার তুমি যদি না নাও, তা হলে মকদ্দমা চলবে বলে রাখলুম।

ফকির। বাপ রে! মকদ্দমা! পায়ে ধরি, একটু রাস্তা ছাড়ুন।

দুই স্ত্রী। যাবে কোথায়, কোন্‌ চুলোয়, যমের কোন্‌ দুয়োরে?

ফকির। গুরো! (হতবুদ্ধি হয়ে বসে পড়ল)

হৈমবতীর প্রবেশ ও ফকিরকে প্রণাম

ফকির। (লাফিয়ে উঠে) এ কী, এ যে হৈমবতী! বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও।

১। ওলো, ওর সেই কাশীর বউ, এখনো মরে নি বুঝি!

মাখনকে নিয়ে পুষ্পর প্রবেশ

মাখন। ধরা দিলেম— বেওজর। লাগাও হাতকড়ি। প্রমাণের দরকার নেই। একেবারে সিধে নাকের দিকে তাকান। আমি মাখনচন্দ্র। এই আমার দড়ি আর এই আমার কল্‌সি। মা অঞ্জনা, কিষ্কিন্ধ্যায় তো ঢোকালে। মাঝে মাঝে খবর নিয়ো। নইলে বিপদে পড়লে আবার লাফ মারব।

পুষ্প। ফকিরদা, তোমার মুক্তি কোথায় সে তো এখন বুঝেছ?

ফকির। খুব বুঝেছি— এ রাস্তা আর ছাড়ছি নে।

পুষ্প। বাছা মাখন, তোমার মস্ত সুবিধে আছে— তোমার ফুর্তি কেউ মারতে পারবে না। এ দুটিও নয়।

দুই স্ত্রী। ছি ছি, আর একটু হলে তো সর্বনাশ হয়েছিল! (গড় হয়ে প্রণাম ক'রে) বাঁচালে এসে।