মুক্তির উপায়

ষষ্ঠী। ভাই মাখন, এটা তো ভালো কর নি— গোপনে আমাকে জানালে না কেন। তালের বড়ার অভাব কী।

ফকির। গুরো!

২। (কলার ছড়ার বাকি অংশ তুলে ধ’রে) এই দেখো তোমরা। ভাঁড়ারে রেখেছিলুম ব্রাহ্মণভোজন করাব ব’লে। সকালে উঠে আর দেখতে পাই নে। দরজাও খোলা নেই, ভয়ে মরি। আমাদের এই মহাপুরুষের কীর্তি। কলা চুরি করে ধর্মকর্ম করেন!

ষষ্ঠীচরণ। (মহাক্রোধে) দেখো, এ আমি কিছুতেই সইব না। এই ডাইনি দুটোকে ঘর থেকে বিদায় করতে হবে, নইলে আমার মাখনকে টেঁকাতে পারব না। দেখছ তো, মাখন? কেবল ভালোমান্‌ষি করে দুই বউকে কী রকম করে বিগ্‌‌‌‌‌‌‌‌‍ড়িয়ে দিয়েছ!

ফকির। সর্বনাশ! আপনারা সাংঘাতিক ভুল করছেন। আপনাদের সকলের পায়ে ধরি— আমাকে বাঁচান! হে গুরো, কী করলে তুমি।

ষষ্ঠী। না ভাই, বেকবুল যেয়ো না। ধামাটা তুমি ওদের ঘর থেকে এনেছিলে, কলার ছড়াটাও প্রায় নিকেশ করেছ। সেটাতে তোমার অপরাধ হয় নি— তবে লজ্জা পাচ্ছ কেন।

ফকির। দোহাই ধর্মের, দোহাই আপনাদের— আমি ধামাও আনি নি, কলার কাঁদিও আনি নি।

ষষ্ঠী। পষ্টই দেখা যাচ্ছে খেয়েছ তুমি। কেন এত জিদ করছ।

ফকির। খেয়েছি, কিন্তু—

বামনদাস। আবার কিন্তু কিসের!

ফকির। আমি আনি নি।

সকলের হাস্য

পাঁচু। তুমি খাও তালের বড়া, দেয় এনে আর-এক মহাত্মা, এও তো মজা কম নয়। তাকে চেন না?

ফকির। আজ্ঞে না।

সিধু। সে চেনে না তোমাকে?

ফকির। আজ্ঞে না।

নকুল। এ যে আরব্য উপন্যাস।

সকলের হাস্য

ষষ্ঠী। যা হবার তা তো হয়ে গেছে, এখন ঘরে চলো।

ফকির। কার ঘরে যাব?

১। মরি মরি, ঘর চেন না পোড়ারমুখো! বলি, আমাদের দুটিকে চেন তো?

ফকির। সত্যি কথা বলি, রাগ করবেন না, চিনি নে।

সকলে। ঐ লোকটার ভণ্ডামি তো সইবে না। জোর করে নিয়ে যাও ওকে ধরে তালা বন্ধ করে রাখো।

ফকির। গুরো!

সকলে। মিলে ঠেলাঠেলি ওঠো, ওঠো বলছি।

সুধীর। বউ দুটোকে এড়াতে চাও তার মানে বুঝি; কিন্তু তোমার ছেলেমেয়েগুলিকে? তোমার চারটি মেয়ে, তিনটি ছেলে, তাও ভুলেছ না কি।