মুক্তির উপায়

নিতাই। কিনু, দেখ্‌ তো টেনে ওর দাড়িগোঁফ সত্যি কি না।

ফকির। উঃ উঃ!

চণ্ডী। (পিঠে কিল মেরে) কেমন লাগল।

ফকির। উঃ!

চণ্ডী। ঐ তো, সন্ন্যাসীর সুখদুঃখবোধ আছে তো! মাথায় হুঁকোর জল ঢালি তবে, মাথা ঠাণ্ডা হোক।

ষষ্ঠী। আহা, কেন ওকে বিরক্ত করছ, ভাই। সাত বছর পরে ফিরে এল, সবাই মিলে আবার ওকে তাড়াবে দেখছি। মাখন, ও ভাই মাখন, আর দুখ্‌খু দিস্‌ নে— একটা কথা ক, নাহয় দুটো গাল দিলিই বা!

ফকির। আপনারা আমাকে মাখন বলে ডাকছেন কেন। পূর্ব-আশ্রমে আমার যে নাম থাক্‌, আমার গুরুদত্ত নাম চিদানন্দ স্বামী।

সকলের উচ্চহাস্য

চিনু। ওরে বাবা, ত্রাণকর্তা এলেন আমাদের। দেখ্‌ মাখ্‌না, ন্যাকামি করিস নে। ভাবছিস, এমনি করে আবার ফাঁকি দিয়ে পালাবি! সেটি হচ্ছ না; তোর দুই বউয়ের হাতে দুই কান জিম্মে করে দেব, থাকবি কড়া পাহারায়।

ফকির। গুরো, হায় গুরো!

দুই স্ত্রীর প্রবেশ

১। ঐ যে গো, মুখ চোখ বদলিয়ে এসেছেন আমাদের কলির নারদ।

ফকির। মা, আমি তোমাদের অধম সন্তান, দয়া করো আমাকে।

সকলে। এই এই, করলে কী! প্রাণের ভয়ে মা বলে ফেললে?

১। ও পোড়াকপালে মিন্‌সে, তুই মা বলিস কাকে!

২। চোখের মাথা খেয়ে বসেছিস, তোর মরণ হয় না!

ফকির। একটু ভালো করে আমাকে দেখে নিন।

১। তোমাকে দেখে দেখে চোখ ক্ষয়ে গেছে। তুমি কচি খোকা নও, নতুন জন্মাও নি। তোমার দুধের দাঁত অনেকদিন পড়েছে, তোমার বয়সের কি গাছ পাথর আছে। তোমায় যম ভুলেছে বলে কি আমরাও ভুলব।

২। (নাক মুচ্‌ড়িয়ে দিয়ে) সাক্ষীকে বিদায় করেছ নাকের ডগা থেকে। তাই বলে আমাদের ভোলাতে পারবে না— তোমার বিট্‌লেমি ঢের জানা আছে। ওমা, ওমা, ঐ দেখ্‌ লো ছুট্‌কি— সেই তালের বড়ার ধামাটা।

১। তাই রাত্তিরে গিয়েছিলেন ভূত সেজে বড়া খেতে!

২। চক্কোত্তিমশায়, এই দেখে নাও— মিন্‌সে রান্নাঘরে ঢুকে এনেছে বড়াসুদ্ধ আমাদের ধামা চুরি করে।

সকলের হাস্য

কানু মণ্ডল। সে কি হয়। যোগবল, ভাঁড়ার থেকে উড়িয়ে এনেছে।

ষষ্ঠী। ওগো বউদিদিরা, কেন ওকে খোঁটা দিচ্ছ। ঘরের বড়া ঘরের মানুষই যদি নিয়ে এসে থাকে তাকে কি চুরি বলে।

১। ভালোমান্‌ষের মতো যদি নিত তবে দোষ ছিল না— মা গো, সে কী দাঁতখিঁচুনি। আমার তো দাঁতকপাটি লেগে গেল।