রাজা ও রানী
মন্ত্রীর প্রবেশ

     মন্ত্রী।                 ছিলেন না মহারাজ?

  দেবদত্ত।  করেছেন অন্তর্ধান অন্তঃপুর-পানে।


বসিয়া পড়িয়া

     মন্ত্রী।  হা বিধাতঃ, এ রাজ্যের কী দশা করিলে!

কোথা রাজা, কোথা দণ্ড, কোথা সিংহাসন!

শ্মশানভূমির মতো বিষণ্ন বিশাল

রাজ্যের বক্ষের 'পরে সগর্বে দাঁড়ায়ে

বধির পাষাণ রুদ্ধ অন্ধ অন্তঃপুর।

রাজশ্রী দুয়ারে বসি অনাথার বেশে

কাঁদে হাহাকার রবে।

  দেবদত্ত।                         দেখে হাসি আসে।

রাজা করে পলায়ন, রাজ্য ধায় পিছে —

হল ভালো, মন্ত্রিবর, অহর্নিশি যেন

রাজ্য ও রাজায় মিলে লুকোচুরি খেলা।

     মন্ত্রী।  এ কি হাসিবার কথা ব্রাহ্মণ ঠাকুর?

  দেবদত্ত।  না হাসিয়া করিব কী? অরণ্যে ক্রন্দন

সে তো বালকের কাজ। দিবস-রজনী

বিলাপ না হয় সহ্য, তাই মাঝে মাঝে

রোদনের পরিবর্তে শুষ্ক শ্বেত হাসি

জমাট অশ্রুর মতো তুষার-কঠিন।

কী ঘটেছে বলো শুনি।

     মন্ত্রী।                           জান তো সকলি।

রানীর কুটুম্ব যত বিদেশী কাশ্মীরী

দেশ জুড়ে বসিয়াছে। রাজার প্রতাপ

ভাগ করে লইয়াছে খণ্ড খণ্ড করি,

বিষ্ণুচক্রে ছিন্ন মৃত সতীদেহ-সম।

বিদেশীর অত্যাচারে জর্জর কাতর

কাঁদে প্রজা। অরাজক রাজসভামাঝে

মিলায় ক্রন্দন। বিদেশী অমাত্য যত