রাজা ও রানী

বসে বসে হাসে। শূন্যসিংহাসন-পার্শ্বে

বিদীর্ণ হৃদয় মন্ত্রী বসি নতশিরে।

  দেবদত্ত।  বহে ঝড়, ডোবে তরী, কাঁদে যাত্রী যত,

রিক্তহস্ত কর্ণধার উচ্চে একা বসি

বলে ‘কর্ণ কোথা গেল!’ মিছে খুঁজে মর,

রমণী নিয়েছে টেনে রাজকর্ণখানা,

বাহিছে প্রেমের তরী লীলা-সরোবরে

বসন্ত-পবনে। রাজ্যের বোঝাই নিয়ে

মন্ত্রীটা মরুক ডুবে অকূল পাথারে।

     মন্ত্রী।  হেসো না ঠাকুর। ছি ছি, শোকের সময়ে

হাসি অকল্যাণ।

  দেবদত্ত।                      আমি বলি মন্ত্রিবর,

রাজারে ডিঙায়ে, একেবারে পড়ো গিয়ে

রানীর চরণে।

     মন্ত্রী।                  আমি পারিব না তাহা।

আপন আত্মীয়-জনে করিবে বিচার

রমণী, এমন কথা শুনি নাই কভু।

  দেবদত্ত।  শুধু শাস্ত্র জান মন্ত্রী, চেন না মানুষ।

বরঞ্চ আপন জনে আপনার হাতে

দণ্ড দিতে পারে নারী, পারে না সহিতে

পরের বিচার।

     মন্ত্রী।                       ওই শোনো কোলাহল।

  দেবদত্ত।  এ কি প্রজার বিদ্রোহ?

     মন্ত্রী।                      চলো দেখে আসি।


দ্বিতীয় দৃশ্য
রাজপথ
লোকারণ্য

কিনু নাপিত। ওরে ভাই, কান্নার দিন নয়। অনেক কেঁদেছি, তাতে কিছু হল কি?

মন্‌সুখ চাষা। ঠিক বলেছিল রে, সাহসে সব কাজ হয়— ওই যে কথায় বলে ‘আছে যার বুকের পাটা যমরাজকে সে