রাজা ও রানী

সব ছেড়ে হও তুমি আমারি কেবল।

তবেই ফুরাবে কাজ — তৃপ্তমন হয়ে

বাহিরিব বিশ্বরাজ্য জয় করিবারে।

অতৃপ্ত রাখিবে মোরে যতদিন তুমি

তোমার অদৃষ্ট-সম রব তব সাথে।

   সুমিত্রা।  আজ্ঞা করো মহারাজ, মহিষী হইয়া

আপনি প্রজারে আমি করিব রক্ষণ।

[ প্রস্থান

বিক্রমদেব।  এমনি করেই মোরে করেছ বিকল।

আছ তুমি আপনার মহত্ত্বশিখরে

বসি একাকিনী ; আমি পাই নে তোমারে।

দিবানিশি চাহি তাই। তুমি যাও কাজে,

আমি ফিরি তোমারে চাহিয়া। হায় হায়,

তোমায় আমায় কভু হবে কি মিলন?

দেবদত্তের প্রবেশ

  দেবদত্ত।  জয় হোক মহারানী — কোথা মহারানী,

একা তুমি মহারাজ?

বিক্রমদেব।                      তুমি কেন হেথা?

ব্রাহ্মণের ষড়যন্ত্র অন্তঃপুরমাঝে?

কে দিয়েছে মহিষীরে রাজ্যের সংবাদ?

  দেবদত্ত।  রাজ্যের সংবাদ রাজ্য আপনি দিয়েছে।

ঊর্ধ্বস্বরে কেঁদে মরে রাজ্য উৎপীড়িত

নিতান্ত প্রাণের দায়ে — সে কি ভাবে কভু

পাছে তব বিশ্রামের হয় কোনো ক্ষতি?

ভয় নাই, মহারাজ, এসেছি কিঞ্চিৎ

ভিক্ষা মাগিবার তরে রানীমার কাছে।

ব্রাহ্মণী বড়োই রুক্ষ, গৃহে অন্ন নাই,

অথচ ক্ষুধার কিছু নাই অপ্রতুল।

[ প্রস্থান

বিক্রমদেব।  সুখী হোক, সুখে থাক্‌ এ রাজ্যের সবে।

কেন দুঃখ, কেন পীড়া, কেন এ ক্রন্দন!