বিসর্জন

অপর্ণার প্রবেশ

পার্শ্বে আসিয়া

 

অপর্ণা।      জয়সিংহ! এসো জয়সিংহ, শীঘ্র এসো

এ মন্দির ছেড়ে।

জয়সিংহ।    বিদীর্ণ হইল বক্ষ।

[ রঘুপতি অপর্ণা ও জয়সিংহের প্রস্থান

 

রাজার প্রবেশ

 

প্রজাগণ।     রক্ষা করো মহারাজ, আমাদের রক্ষা

করো — মাকে ফিরে দাও!

গোবিন্দমাণিক্য।                           বৎসগণ, করো

অবধান। সেই মোর প্রাণপণ সাধ

জননীরে ফিরে এনে দেব।

প্রজাগণ।                               জয় হোক

মহারাজ, জয় হোক তব।

গোবিন্দমাণিক্য।                             একবার

শুধাই তোদের, তোরা কি মায়ের গর্ভে

নিস নি জনম? মাতৃগণ, তোমরা তো

অনুভব করিয়াছ কোমল হৃদয়ে

মাতৃস্নেহসুধা — বলো দেখি মা কি নেই?

মাতৃস্নেহ সব হতে পবিত্র প্রাচীন ;

সৃষ্টির প্রথম দণ্ডে মাতৃস্নেহ শুধু

একেলা জাগিয়া বসে ছিল, নতনেত্রে

তরুণ বিশ্বেরে কোলে লয়ে। আজিও সে

পুরাতন মাতৃস্নেহে রয়েছে বসিয়া

ধৈর্যের প্রতিমা হয়ে। সহিয়াছে কত

উপদ্রব, কত শোক, কত ব্যথা, কত

অনাদর — চোখের সম্মুখে ভায়ে ভায়ে

কত রক্তপাত, কত নিষ্ঠুরতা, কত

অবিশ্বাস — বাক্যহীন বেদনা বহিয়া