পলাতকা

               দুঃখে সুখে দিন হয়ে যায় গত

স্রোতের জলে ঝরে-পড়া ভেসে-যাওয়া ফুলের মতো,

                   অবশেষে হল

          মঞ্জুলিকার বয়স ভরা ষোলো।

                   কখন শিশুকালে

          হৃদয়-লতার পাতার অন্তরালে

                   বেরিয়েছিল একটি কুঁড়ি

          প্রাণের গোপন রহস্যতল ফুঁড়ি ;

                   জানত না তো আপনাকে সে,

শুধায় নি তার নাম কোনোদিন বাহির হতে খেপা বাতাস এসে,

     সেই কুঁড়ি আজ অন্তরে তার উঠছে ফুটে

                   মধুর রসে ভরে উঠে।

                   সে যে প্রেমের ফুল

          আপন রাঙা পাপড়ি - ভারে আপনি সমাকুল।

          আপনাকে তার চিনতে যে আর নাইকো বাকি,

                   তাইতো থাকি থাকি

               চমকে ওঠে নিজের পানে চেয়ে।

আকাশপারের বাণী তারে ডাক দিয়ে যায় আলোর ঝরনা বেয়ে ;

                  রাতের অন্ধকারে

        কোন্‌ অসীমের রোদনভরা বেদন লাগে তারে।

                  বাহির হতে তার

             ঘুচে গেছে সকল অলংকার ;

        অন্তর তার রাঙিয়ে ওঠে স্তরে স্তরে,

         তাই দেখে সে আপনি ভেবে মরে।

                  কখন কাজের ফাঁকে

    জানলা ধরে চুপ করে সে বাইরে চেয়ে থাকে —

    যেখানে ওই শজনে গাছের ফুলের ঝুরি বেড়ার গায়ে

                  রাশি রাশি হাসির ঘায়ে

        আকাশটারে পাগল করে দিবস - রাতি।

     যে ছিল তার ছেলেবেলার খেলাঘরের সাথি

              আজ সে কেমন করে

            জলস্থলের হৃদয়খানি দিল ভরে।