পলাতকা

               ভাজাভুজি হত পাঁচটা-ছটা ;

               পাঁঠা হত রুটি-লুচির সাথে।

মঞ্জুলিকা দুবেলা সব আগাগোড়া রাঁধে আপন হাতে।

          একাদশী ইত্যাদি তার সকল তিথিতেই

               রাঁধার ফর্দ এই।

          বাপের ঘরটি আপনি মোছে ঝাড়ে,

     রৌদ্রে দিয়ে গরম পোশাক আপনি তোলে পাড়ে।

     ডেস্কে বাক্সে কাগজপত্র সাজায় থাকে থাকে,

               ধোবার বাড়ির ফর্দ টুকে রাখে।

   গয়লানী আর মুদির হিসাব রাখতে চেষ্টা করে,

ঠিক দিতে ভুল হলে তখন বাপের কাছে ধমক খেয়ে মরে।

     কাসুন্দি তার কোনোমতেই হয় না মায়ের মতো,

               তাই নিয়ে তার কত

               নালিশ শুনতে হয়।

            তা ছাড়া তার পান-সাজাটা মনের মতো নয়।

     মায়ের সঙ্গে তুলনাতে পদে - পদেই ঘটে যে তার ত্রুটি।

                   মোটামুটি —

          আজকালকার মেয়েরা কেউ নয় সেকালের মতো।

                   হয়ে নীরব নত

          মঞ্জুলী সব সহ্য করে, সর্বদাই সে শান্ত,

                    কাজ করে অক্লান্ত।

              যেমন করে মাতা বারংবার

              শিশু ছেলের সহস্র আবদার

          হেসে সকল বহন করেন স্নেহের কৌতুকে,

              তেমনি করেই সুপ্রসন্ন মুখে

          মঞ্জুলী তার বাপের নালিশ দন্ডে দন্ডে শোনে,

                   হাসে মনে মনে।

          বাবার কাছে মায়ের স্মৃতি কতই মূল্যবান

সেই কথাটা মনে করে গর্বসুখে পূর্ণ তাহার প্রাণ।

          “ আমার মায়ের যত্ন যে-জন পেয়েছে একবার

               আর কিছু কি পছন্দ হয় তার। ”