মদনভস্মের পর

পঞ্চশরে দগ্ধ করে করেছ একি সন্ন্যাসী,

         বিশ্বময় দিয়েছ তারে ছড়ায়ে!

ব্যাকুলতর বেদনা তার বাতাসে উঠে নিশ্বাসি,

         অশ্রু তার আকাশে পড়ে গড়ায়ে।

ভরিয়া উঠে নিখিল ভব রতিবিলাপ-সংগীতে,

         সকল দিক কাঁদিয়া উঠে আপনি।

ফাগুন মাসে নিমেষ-মাঝে না জানি কার ইঙ্গিতে

         শিহরি উঠি মুরছি পড়ে অবনী।

 

আজিকে তাই বুঝিতে নারি কিসের বাজে যন্ত্রনা

         হৃদযবীণাযন্ত্রে মাহা পুলকে!

তরুণী বসি ভাবিয়া মরে কী দেয় তারে মন্ত্রণা

         মিলিয়া সবে দ্যুলোকে   ভূলোকে।

কী কথা উঠে মমরিয়া বকুলতরুপল্লবে,

         ভ্রমর উঠে গুঞ্জরিয়া কী ভাষা!

ঊর্ধ্বমুখে সূর্যমুখী স্মরিছে কোন্ বল্লভে,

         নির্ঝরিণী বহিছে কোন্ পিপাসা!

 

বসন কার দেখিতে পাই জ্যোৎস্নালোকে লুন্ঠিত

         নয়ন কার নীরব নীল গগনে!

বদন কার দেখিতে পাই কিরণে অবগুন্ঠিত,

         চরণ কার কোমল তৃণশয়ণে!

পরশ কার পুষ্পাবাসে পরান মন উল্লাসি

         হৃদয়ে উঠে লতার মতো জড়ায়ে!

পঞ্চশরে ভষ্ম করে করেছ একি সন্ন্যাসী,

         বিশ্বময় দিয়েছ তারে ছড়ায়ে।