পঁচিশে বৈশাখ
               রাত্রি হল ভোর।
                   আজি মোর
              জন্মের স্মরণপূর্ণ বাণী,
         প্রভাতের রৌদ্রে-লেখা লিপিখানি
              হাতে করে আনি
             দ্বারে আসি দিল ডাক
              পঁচিশে বৈশাখ।

 

            দিগন্তে আরক্ত রবি;
অরণ্যের ম্লান ছায়া বাজে যেন বিষণ্ন ভৈরবী।
      শাল-তাল-শিরীষের মিলিত মর্মরে
           বনান্তের ধ্যান ভঙ্গ করে।
           রক্তপথ শুষ্ক মাঠে,
যেন তিলকের রেখা সন্ন্যাসীর উদার ললাটে।

 

         এই দিন বৎসরে বৎসরে
   নানা বেশে ফিরে আসে ধরণীর ‘পরে—
আতাম্র আম্রের বনে ক্ষণে ক্ষণে সাড়া দিয়ে,
       তরুণ তালের গুচ্ছে নাড়া দিয়ে,
মধ্যদিনে অকস্মাৎ শুষ্কপত্রে তাড়া দিয়ে,
       কখনো বা আপনারে ছাড়া দিয়ে
         কালবৈশাখীর মত্ত মেঘে
            বন্ধহীন বেগে।
       আর সে একান্তে আসে
            মোর পাশে
পীত উত্তরীয়তলে লয়ে মোর প্রাণদেবতার
         স্বহস্তে সজ্জিত উপহার—
      নীলকান্ত আকাশের থালা,
তারি ‘পরে ভুবনের উচ্ছলিত সুধার পিয়ালা।