পুনশ্চ

                   কুকুর অকারণে আর্তনাদ করছে,

ঘোড়াগুলো কান খাড়া করে উঠছে ডেকে

                   কোন্‌ অলক্ষ্যের দিকে তাকিয়ে।

        হঠাৎ গম্ভীর ভীষণ শব্দ শোনা গেল মাটির নীচে —

           পাতালে দানবেরা যেন রণদামামা বাজিয়ে দিলে —

                   গুরু-গুরু গুরু-গুরু।

           মন্দিরে শঙ্খ ঘণ্টা বাজতে লাগল প্রবল শব্দে।

                   হাতি বাঁধা ছিল,

             তারা বন্ধন ছিঁড়ে গর্জন করতে করতে

                        ছুটল চার দিকে

                           যেন ঘূর্ণি-ঝড়ের মেঘ।

                       তুফান উঠল মাটিতে —

           ছুটল উট মহিষ গোরু ছাগল ভেড়া

        ঊর্ধ্বশ্বাসে পালে পালে।

হাজার হাজার দিশাহারা লোক

        আর্তস্বরে ছুটে বেড়ায় —

                চোখে তাদের ধাঁধা লাগে,

আত্মপরের ভেদ হারিয়ে কে কাকে দেয় দ'লে।

        মাটি ফেটে ফেটে ওঠে ধোঁয়া, ওঠে গরম জল —

ভীম-সরোবরের দিঘি বালির নীচে গেল শুষে।

           মন্দিরের চূড়ায় বাঁধা বড়ো ঘণ্টা দুলতে দুলতে

                   বাজতে লাগল ঢং ঢং।

               আচম্‌কা ধ্বনি থামল একটা ভেঙে-পড়ার শব্দে।

পৃথিবী যখন স্তব্ধ হল

        পূর্ণপ্রায় চাঁদ তখন হেলেছে পশ্চিমের দিকে।

আকাশে উঠছে জ্বলে-ওঠা কানাতগুলোর ধোঁয়ার কুণ্ডলী,

        জ্যোৎস্নাকে যেন অজগর সাপে জড়িয়েছে।

 

    পরদিন আত্মীয়দের বিলাপে দিগ্‌বিদিক যখন শোকার্ত

তখন রাজসৈনিকদল মন্দির ঘিরে দাঁড়ালো,

                   পাছে অশুচিতার কারণ ঘটে।

    রাজমন্ত্রী এল, দৈবজ্ঞ এল, স্মার্ত পণ্ডিত এল।