জন্মদিন

দৃষ্টিজালে জড়ায় ওকে হাজারখানা চোখ,

               ধ্বনির ঝড়ে বিপন্ন ওই লোক।

জন্মদিনের মুখর তিথি যারা ভুলেই থাকে,

দোহাই ওগো, তাদের দলে লও এ মানুষটাকে —

সজনে পাতার মতো যাদের হালকা পরিচয়,

          দুলুক খসুক শব্দ নাহি হয়।

 

 

          সবার মাঝে পৃথক ও যে ভিড়ের কারাগারে

                   খ্যাতি-বেড়ির নিরন্ত ঝংকারে।

          সবাই মিলে নানা রঙে রঙিন করছে ওরে,

                নিলাজ মঞ্চে রাখছে তুলে ধরে,

                   আঙুল তুলে দেখাচ্ছে দিনরাত ;

লুকোয় কোথা ভেবে না পায়, আড়াল ভূমিসাৎ।

                   দাও-না ছেড়ে ওকে

স্নিগ্ধ-আলো শ্যামল-ছায়া বিরল-কথার লোকে,

                   বেড়াবিহীন বিরাট ধূলি- 'পর,

সেই যেখানে মহাশিশুর আদিম খেলাঘর।

 

 

ভোরবেলাকার পাখির ডাকে প্রথম খেয়া এসে

          ঠেকল যখন সব-প্রথমের চেনাশোনার দেশে,

নামল ঘাটে যখন তারে সাজ রাখে নি ঢেকে,

ছুটির আলো নগ্ন গায়ে লাগল আকাশ থেকে —

          যেমন করে লাগে তরীর পালে,

যেমন লাগে অশোক গাছের কচি পাতার ডালে।

           নাম ভোলা ফুল ফুটল ঘাসে ঘাসে

                   সেই প্রভাতের সহজ অবকাশে।

ছুটির যজ্ঞে পুষ্পহোমে জাগল বকুলশাখা,

ছুটির শূন্যে ফাগুনবেলা মেলল সোনার পাখা।