পুনশ্চ

কোনা-এক সময়ে অকারণ সন্দেহে কোনো-এক পাগল

তার প্রতিবেশীকে হঠাৎ মারে;

দেখতে দেখতে নির্বিচার বিবাদ বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে দিকে দিকে।

কোনো নারী আর্তস্বরে বিলাপ করে;

বলে, হায়, হায়, আমাদের দিশাহারা সন্তান উচ্ছন্ন গেল।

কোনো কামিনী যৌবনমদবিলসিত নগ্ন দেহে অট্টহাস্য করে;

বলে, কিছুতে কিছু আসে যায় না।

ঊর্ধ্বে গিরিচূড়ায় বসে আছে ভক্ত, তুষারশুভ্র নীরবতার মধ্যে;

আকাশে তার নিদ্রাহীন চক্ষু খোঁজে আলোকের ইঙ্গিত।

মেঘ যখন ঘনীভূত, নিশাচর পাখি চীৎকারশব্দে যখন উড়ে যায়,

সে বলে, ভয় নেই ভাই, মানবকে মহান্‌ বলে জেনো।

ওরা শোনে না, বলে পশুশক্তিই আদ্যাশক্তি, বলে পশুই শাশ্বত;

বলে সাধুতা তলে তলে আত্মপ্রবঞ্চক।

যখন ওরা আঘাত পায় বিলাপ ক'রে বলে, ভাই, তুমি কোথায়।

উত্তরে শুনতে পায়, আমি তোমার পাশেই।

অন্ধকারে দেখতে পায় না, তর্ক করে — এ বাণী ভয়ার্তের মায়াসৃষ্টি,

আত্মসান্ত্বনার বিড়ম্বনা।

বলে, মানুষ চিরদিন কেবল সংগ্রাম করবে

মরীচিকার অধিকার নিয়ে

হিংসাকণ্টকিত অন্তহীন মরুভূমির মধ্যে।

মেঘ সরে গেল।

শুকতারা দেখা দিল পূর্বদিগন্তে,

পৃথিবীর বক্ষ থেকে উঠল আরামের দীর্ঘনিশ্বাস,

পল্লবমর্মর বনপথে-পথে হিল্লোলিত,

পাখি ডাক দিল শাখায়-শাখায়।

ভক্ত বললে, সময় এসেছে।

কিসের সময়?

যাত্রার।

ওরা বসে ভাবলে।