ছুটির লেখা

এ লেখা মোর শূন্যদ্বীপের সৈকততীর,

          তাকিয়ে থাকে দৃষ্টি - অতীত পারের পানে।

উদ্দেশহীন জোয়ার - ভাঁটায় অস্থির নীর

          শামুক ঝিনুক যা - খুশি তাই ভাসিয়ে আনে।

এ লেখা নয় বিরাট সভার শ্রোতার লাগি,

          রিক্ত ঘরে একলা এ যে দিন কাটাবার ;

আটপহুরে কাপড়টা তার ধুলায় দাগি,

          বড়োঘরের নেমন্তন্নে নয় পাঠাবার।

বয়ঃসন্ধিকালের যেন বালিকাটি,

          ভাব্‌নাগুলো উড়ো উড়ো আপনাভোলা।

অযতনের সঙ্গী তাহার ধুলোমাটি,

          বাহির - পানে পথের দিকে দুয়ার খোলা।

আলস্যে তার পা ছড়ানো মেঝের উপর,

         ললাটে তার রুক্ষ কেশের অবহেলা।

 নাইকো খেয়াল কখন সকাল পেরোয় দুপুর

         রেশমি ডানায় যায় চলে তার হালকা বেলা।

চিনতে যদি চাও তাহারে এসো তবে,

          দ্বারের ফাঁকে দাঁড়িয়ে থেকো আমার পিছু।

শুধাও যদি প্রশ্ন কোনো তাকিয়ে রবে

          বোকার মতন—বলার কথা নেই - যে কিছু।

ধুলোয় লোটে রাঙাপাড়ের আঁচলখানা,

          দুই চোখে তার নীল আকাশের সুদূর ছুটি ;

কানে কানে কে কথা কয় যায় না জানা,

          মুখের 'পরে কে রাখে তার নয়নদুটি।

মর্মরিত শ্যামল বনের কাঁপন থেকে

          চমকে নামে আলোর কণা আলগা চুলে ;

তাকিয়ে দেখে নদীর রেখা চলছে বেঁকে—

          দোয়েল - ডাকা ঝাউয়ের শাখা উঠছে দুলে।

সম্মুখে তার বাগান - কোণায় কামিনী ফুল

          আনন্দিত অপব্যয়ে পাপড়ি ছড়ায়।