সে

আমি বললুম, তা হবে, হয়তো ভালোই লিখেছে। কিন্তু, ও ভালো লেখে কি আমি ভালো লিখি সে সম্বন্ধে শেষ অভিমতটা দেবার জন্যে অন্তত আরো দশটা বছর অপক্ষো কোরো।

পুপু বললে, আমার বাঘ কিন্তু আমাকে খেতে আসে না।

সে তো তোমাকে প্রত্যক্ষ দেখেই বুঝতে পারছি। তোমার বাঘ কী করে।

রাত্তিরে যখন শুয়ে থাকি বাইরে থেকে ও জানলা আঁচড়ায়। খুলে দিলেই হাসে।

তা হতে পারে, ওরা খুব হাসিয়ে জাত। ইংরেজিতে যাকে বলে হিউমরাস্‌। কথায় কথায় দাঁত বের করে।

পুপে এসে জিগেস করলে, দাদামশায়, তুমি যে বললে শনিবারে সে আসবে তোমার নেমন্তন্নে। কী হল।

সবই ঠিক হয়েছিল। হাজি মিঞা শিক্‌কাবাব বানিয়েছিল, তোফা হয়েছিল খেতে।

তার পরে?

তার পরে নিজে খেলুম তার বারো-আনা আন্দাজ, আর পাড়ার কালু ছোঁড়াটাকে দিলুম বাকিটুকু। কালু বললে, দাদাবাবু, এ-যে আমাদের কাঁচকলার বড়ার চেয়ে ভালো।

সে কিছু খেল না?

জো কী।

সে এল না?

সাধ্য কী তার।

তবে সে আছে কোথায়।

কোত্থাও না।

ঘরে?

না।

দেশে?

না।

বিলেতে?

না।

তুমি যে বলছিলে, আণ্ডামানে যাওয়া ওর একরকম ঠিক হয়ে আছে। গেল নাকি।

দরকার হল না। তা হলে কী হল আমাকে বলছ না কেন।

ভয় পাবে কিংবা দুঃখ পাবে, তাই বলি নে।

তা হোক, বলতে হবে।

আচ্ছা, তবে শোনো। সেদিন ক্লাস-পড়াবার খাতিরে আমার পড়ে নেবার কথা ছিল ‘বিদগ্ধমুখমণ্ডন’। এক সময় হঠাৎ দেখি, সেটা রয়েছে পড়ে, হাতে উঠে এসেছে ‘পাঁচুপাক্‌ড়াশির পিস্‌শাশুড়ি’। পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে পড়েছিলুম, রাত হবে তখন আড়াইটা।